Putin India Security: সুরক্ষার জন্য নিজের ‘দুর্গ’ নিয়ে ভারতে আসছেন পুতিন!

দুদিনের ভারত সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। 'বিশেষ বন্ধু' নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে যোগ দেবেন ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লিতে নামার পর থেকেই ঠাসা কর্মসূচি। এই ঐতিহাসিক সফরে পুতিনকে ঘিরে সর্বক্ষণ থাকবেন তাঁর ৫০ জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। যাঁরা প্রত্যেকেই রাশিয়ার 'ফেডারেল প্রোটেকটিভ সার্ভিস' বা FSO-র সদস্য। যাঁদের সবরকম প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে সাইবেরিয়ার হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

Putin India Security: সুরক্ষার জন্য নিজের ‘দুর্গ’ নিয়ে ভারতে আসছেন পুতিন!

| Edited By: Purvi Ghosh

Dec 03, 2025 | 8:40 PM

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের দুদিনের ভারত সফরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা। সাত স্তরীয় নিরাপত্তার বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানীকে। মস্কো থেকে উড়িয়ে আনা হচ্ছে পুতিনের বিশেষ ‘চার চাকার দুর্গ’ – ‘অরাস সেনাত’। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মোদী-পুতিনকে একসঙ্গে এই বিশেষ গাড়িতে দেখা যাবে। শেষবার তাঁদের দুজনকে এই গাড়িতে একসঙ্গে দেখা গেছিল চিনে শাংহাই সম্মেলনে।

দুদিনের ভারত সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। ‘বিশেষ বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে যোগ দেবেন ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে। বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লিতে নামার পর থেকেই ঠাসা কর্মসূচি। এই ঐতিহাসিক সফরে পুতিনকে ঘিরে সর্বক্ষণ থাকবেন তাঁর ৫০ জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। যাঁরা প্রত্যেকেই রাশিয়ার ‘ফেডারেল প্রোটেকটিভ সার্ভিস’ বা FSO-র সদস্য। যাঁদের সবরকম প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে সাইবেরিয়ার হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পুতিনের নিরাপত্তা বলয়ের একদম ভিতরে প্রথমে থাকবে FSO, তার বাইরে কোবরা বাহিনী, আরও বাইরের দিকে NSG-SPG। যাঁরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর নিরাপত্তায় থাকেন। বেষ্টনীর একেবারে বাইরের দিকে থাকবে দিল্লি পুলিশের কমান্ডো বাহিনী, স্নাইপার-রা। সবমিলিয়ে সেনা ও পুলিশের সাত স্তরীয় নিরাপত্তা সর্বক্ষণ ঘিরে থাকবে রুশ প্রেসিডেন্টকে। লালকেল্লা বিস্ফোরণের পর পুতিনের নিরাপত্তা নিয়ে নজিরবিহীন সতর্কতা চোখে পড়ার মতো। পুতিন যে হোটেলের ছাদে থাকবেন, তার ছাদে স্নাইপার মোতায়েন। শুধু দিল্লি পুলিশে প্রায় ৩০০০ জনকে মোতায়েন করেছে। নজরদারি চালাতে পুতিনের প্রতিটি রুটে ড্রোনের মাধ্যমে তল্লাশি চলছে। নেওয়া হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য-ও।

এখানেই শেষ নয়। মস্কো থেকে দিল্লি উড়ে এসেছে পুতিনের প্রেসিডেন্সিয়াল বাহন- সাড়ে ৬ টনের ‘অরাস সেনাত’। ৬০০ হর্সপাওয়ারের এই গাড়ি আসলে চার চাকার উপরে চলমান ‘অভেদ্য’ এক দুর্গ। মাত্র ২ সেকেন্ডে ০ থেকে ১৪০ কিলোমিটারে গতিতে ছুটতে পারে এই গাড়ি। বাইরে ব্যালিস্টিক আর্মার। গাড়ির ভিতরে মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। বোমা ও গ্রেনেড হামলায় এই গাড়ির কোনও ক্ষতি হবে না। ভিতরে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন ও রক্তের সরবরাহ থাকে। চারটি চাকা ফুটো হয়ে গেলেও এই গাড়ি থামবে না। সিকিওর কমিউনিকেশন সিস্টেম থাকায় এর ভিতরে বসেই যে কোনও জায়গা থেকে পরমাণু হামলার নির্দেশ দিতে পারেন পুতিন। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা ‘নিউক্লিয়ার ফুটবল’ সঙ্গে নিয়েই মস্কো থেকে দিল্লি আসছেন। নিউক্লিয়ার ফুটবল হল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা এক কালো রঙের বিশেষ ব্রিফকেস। এর মধ্যেই হামলার জন্য প্রয়োজনীয় কোড থাকে। এই কোড-কে বলা হয় নিউক্লিয়ার বিস্কুট। আর প্রত্যেক FSO ক্যাডারের কোমরে থাকছে GSh-18 pistols। পুতিনের কনভয়ে থাকবে ২০টি-রও বেশি মার্সিডিজ বেঞ্জের G-Class-এর গাড়ি।

ভারতে পুতিনের কর্মসূচি

  • ভারত সফরে এসে রাতেই মোদীর সঙ্গে নৈশভোজ পুতিনের
  • শুক্রবার রাষ্ট্রপতি ভবনে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে স্বাগত জানানো হবে
  • পরে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়ালে যাবেন পুতিন
  • রাষ্ট্রীয় গেস্ট হাউস দিল্লির ‘হায়দরাবাদ হাউস’-এ বার্ষিক সম্মেলন
  • তারপর ‘ভারত মণ্ডপম’-এ এক অনুষ্ঠানে যাবেন রুশ প্রেসিডেন্ট
  • সফরের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণে যাবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে

এদিকে পুতিন আবার সমগ্র ইউরোপের উদ্দেশ্যে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতে পা রাখছেন। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল এই মুহূর্তে। ট্রাম্পের দাদাগিরি উড়িয়ে ভারত শুধু নভেম্বরেই রাশিয়া থেকে রেকর্ড তেল কিনেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত সবচেয়ে বেশি তেল এখন মস্কো থেকেই আমদানি করে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে রুশ তেল সংস্থাগুলির কাছ থেকে কম দামে তেল কেনার বিষয়ে যে আলোচনা হবে সেটা একপ্রকার নিশ্চিত। সেই সঙ্গে আরও এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম-ও কিনতে চাইবে ভারত। পুতিন নিজে সুখোই-৫৭ ভারতকে দিতে আগ্রহী বলে জানিয়েছে মস্কো। ২০৩০-এর মধ্যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৬৩ থেকে বাড়িয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করুক-চাইছে দুই দেশই। পুতিন ঘনিষ্ঠ য়ুরি উসকোভ ও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ জানিয়েছেন, চেন্নাই থেকে ভ্লাদিভস্তক সি-রুট ও ভারতের চাবাহার বন্দর নিয়েও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হবে।