Iran hijab: হিজাব না পড়লেই হবে মানসিক রোগের চিকিৎসা! খোলা হচ্ছে ক্লিনিক

Nov 15, 2024 | 2:08 PM

Iran hijab: হিজাব না পরতে চাওয়া, কঠোর হিজাব আইন না মানতে চাওয়া মানসিক রোগ? অন্তত এমনটাই মনে করছে ইরানের ইসলামি সরকার। তাই হিজাব আইন অমান্যকারী জন্য তেহরানে ক্লিনিক খোলার কথা ঘোষণা করল সেই দেশের সরকার। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এবং ইরানের মহিলারা।

Iran hijab: হিজাব না পড়লেই হবে মানসিক রোগের চিকিৎসা! খোলা হচ্ছে ক্লিনিক
রঙিন হিজাব পরে ইন্টারনেট ঘাঁটছেন এক ইরানি মহিলা (ফাইল ছবি)
Image Credit source: Getty Images

Follow Us

তেহরান: হিজাব আইন নিয়ে উত্তাল ইরান। ইরানের আইন অনুযায়ী, জনসমক্ষে মহিলাদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। প্রকাশ্যে তাদের মাথা ঢেকে রাখতে হয়। না মানলে পেতে হয় কড়া শাস্তি। তবে সম্প্রতি, এই কঠোর আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন ইরানের মহিলাদের একটা বড় অংশ। ক্রমে ইরানি মহিলাদের মধ্যে হিজাব আইন না মানার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে, এই আইন অমান্যকারী জন্য ক্লিনিক খোলার কথা ঘোষণা করল সেই দেশের সরকার। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর), ইরানের মহিলা ও পরিবার বিভাগের প্রধান, মেহরি তালেবি দারেস্তানি জানিয়েছেন, এর জন্য তেহরানে একটি “হিজাব অপসারণ চিকিত্সা ক্লিনিক” খোলা হবে।

দারেস্তানি জানিয়েছেন, এই ক্লিনিকে হিজাব না পরতে চাওয়া মহিলাদের বৈজ্ঞানিক ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা করা হবে। প্রসঙ্গত, ইরান সরকারের মহিলা ও পরিবার বিভাগ সরাসরি সেই দেশের সর্বোচ্চ নেতা, আলি খামেনেইয়ের আওতাধীন। কাজেই, এই ক্লিনিক খোলার নির্দেশ তাঁরই, এই বিষয়ে সন্দেহ নেই। স্বাভাবিকভাবেই ইরান সরকারের এই ঘোষণার পর, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এবং ইরানের মহিলারা। ইরানের মানবাধিকার আইনজীবী, হোসেইন রাইসি জানিয়েছেন, হিজাব আইন না মেনে চলা মহিলাদের চিকিত্সার জন্য ক্লিনিক খোলা করা অ-ইসলামি প্রথা। এটা ইরানের আইনের সঙ্গেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতে, ইরানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে হিজাব আইন না মানার জন্য হেনস্থা করা হয়েছিল। প্রতিবাদে তিনি তাঁর সমস্ত পোশাক খুলে ফেলেছিলেন। পরণে ছিল শুধুমাত্র অন্তর্বাস। পরে তাঁকে টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সেই সময় ওই ছাত্রীর মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেওয়া হয় এবং তার ফলে তাঁর মাথা ফেটেও গিয়েছিল বলে অভিযোগ। ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শাখায় ঘটা ওই ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র, আমির মাহজব দাবি করেছিলেন, থানায় নিয়ে যাওয়ার পর জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন এবং তিনি মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। সেই মানসিক ব্যধির কারণেই নাকি তিনি পোশাক খুলে ফেলেছিলেন। ফাতেমেহ মোহাজেরানি নামে ইরান সরকারের এক মুখপাত্রও, দাবি করেছিলেন, ওই ছাত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন এবং তাঁর চিকিত্সা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে, হিজাব প্রত্যাখ্যানকারীদের জন্য মানসিক চিকিৎসার ক্লিনিক খোলার খবর এল।

স্বাভাবিকভাবেই এই খবর ইরানের বিভিন্ন প্রতিবাদী গোষ্ঠী এবং মহিলা অধিকার কর্মীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। ইরানের মহিলারা বলছেন, কোনও ক্লিনিক নয়, বরং ইরান সরকার মহিলাদের জন্য আরও এক কারাগার তৈরি করছে। তাঁরা জানিয়েছেন গোটা দেশ সংসারের খরচা সামলাতে এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মোকাবিলা করতে নাজেহাল। কিন্তু দেশের সরকার সবথেকে বেশি চিন্তিত একটা কাপড়ের টুকরো নিয়ে। এই অবস্থায় তাঁরা বলছেন, এখনই ফের রাস্তায় নামতে হবে। নয়তো তারা দেশের সকল মহিলাদের জেলে ঢুকিয়ে দেবে।”

২০২৩ সালে, ২২ বছর বয়সী কুর্দ মহিলা মাহসা আমিনি-কে হিজাব আইন না মানার দায়ে গ্রেফতার করেছিল সেই দেশের নীতি পুলিশ। তাঁকে এক বন্দিশালায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপরই তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। তিন দিন হাসপাতালেরল বিছানায় কোমায় পরে থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়। আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরান জুড়ে এবং তার বাইরেও মহিলাদের নেতৃত্বে জন্ম নিয়েছিল এক গণ বিক্ষোভ। বেশ কয়েকদিন ধরে চলেছিল সেই বিক্ষোভ। শেষে কঠোর হাতে সেই বিক্ষোভ দমন করেছিল ইরান সরকার। এবার কি ফের ক্ষোভের আগুনে জ্বলবে ইরান?

Next Article