বাগদাদ: ১৮ নয়, মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স হোক ৯ বছর। এমনটাই চায় ইরাক সরকার। শুধু তাই নয়, থাকবে না মহিলাদের বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকারও। সন্তানদের উপরে অধিকার বা সম্পত্তিতে উত্তরাধিকারও দাবি করতে পারবে না মহিলারা। এমনটাই আইন আনতে চলেছে ইরাক। প্রস্তাবনা পাশ করার যাবতীয় প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছে।
শিয়া সমর্থিত কট্টরপন্থী সরকার দ্রুত এই আইন আনতে চায়। ইতিমধ্যেই গত ১৬ সেপ্টেম্বর খসড়া আইনের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাশ হয়ে গিয়েছে। সরকারের দাবি, তারা নারীদের অল্প বয়স থেকেই অনৈতিক বা অবৈধ সম্পর্কে জড়ানো থেকে আটকাতে চায়। সেই উদ্দেশেই এই আইন।
ইরাকে ছেলে ও মেয়েদের বিয়ের বৈধ বয়স ছিল ১৮। তবে দুই পক্ষের সম্মতি থাকলে ১৫ বছর বয়সেও বিয়ে করা যেত। নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মেয়েদের বিয়ের বৈধ বয়স কমিয়ে ৯ বছর করা হবে। ছেলেদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স হবে ১৫। বিবাহের সম্পর্ক ছেদ করার অধিকার থাকবে না মহিলাদের। গার্হস্থ্য কলহেও স্বামীর মতামতই মানতে হবে স্ত্রীকে। সন্তানের উপরে অধিকার থেকে শুরু করে সম্পত্তিতে অধিকার- কোনওটাই থাকবে না মহিলাদের। এই খসড়া বিলে বলা হয়েছে যে নাগরিকরা তাদের পারিবারিক সমস্যা মেটানোর জন্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও আদালত-বিচারব্যবস্থার মধ্যে কোনও একটি বেছে নিতে পারবেন।
১৯৫৯ সালে যখন ইরাকে প্রথম ১৮৮ আইন আনা হয়েছিল, তখন তা পশ্চিম এশিয়ায় সবথেকে প্রগতিশীল আইন ছিল। ধর্মীয় ভেদাভেদ না করেই সমস্ত ইরাকি পরিবারের জন্য নির্দিষ্ট আইন স্থির করেছিল। সেই আইনে প্রথম স্ত্রী থাকাকালীন দ্বিতীয় বিয়ে নিষিদ্ধ, অ-মুসলিমকে বিয়ের অধিকারের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল মহিলাদের। কিন্তু বর্তমানের জোট সরকারের উপরে লাগাতার চাপ সৃষ্টি করার কারণেই এই আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যা ইসলামিক শরিয়া আইনের অনুসারে হবে।
তবে ইরাকের মহিলারা ইতিমধ্যেই এই আইনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনের তরফেও ইরাক সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই আইন পাশ হলে মহিলাদের উপরে অত্যাচার বহু গুণ বেড়ে যাবে। জোর করে যৌন ব্যবসা করানোর মতো ভয়ঙ্কর কাজও বাড়বে।