
বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্তবর্তী রাজ্য রাখাইন। দীর্ঘদিন এই অঞ্চলের অশান্তির প্রভাবে সমস্যায় রয়েছে বাংলাদেশও। রাখাইন রাজ্য়ের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি যেন গলার কাঁটা হয়ে আছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কাছেও। রাখাইন প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ প্রায় আরাকান আর্মির কাছেই। তবু এখনও সিত্তে সহ তিনটি প্রধান শহরে জুন্তা বাহিনীকে পরাজিত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ, আরাকান আর্মি সংঘাত দিনে দিনে তীব্রতর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর যে কোনও ধরণের সহায়তা বা সহযোগিতা প্রদানের চাপ থাকবে।
যদিও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান তা করতে অনিচ্ছুক। গত মাসের শেষে, মার্কিন সেনাবাহিনীর প্যাসিফিক ডেপুটি কমান্ডিং জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোয়েল জেবি ভওয়েল বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সময় বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। এই বৈঠকে, জেনারেল জামান আরাকান আর্মির আক্রমণের জন্য বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট খোলা রাখতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতির বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এছাড়াও, মার্কিন উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অ্যালেক্স নেলসন ওং ২ এপ্রিল রোহিঙ্গা অনান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি খলিলুর রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ট্রাম্প প্রশাসন এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষের মধ্যে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্তরের যোগাযোগ। তবে, ওং এবং রহমানের মধ্যে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সেফ জোনের বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা তা এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। যদিও ইন্ডিয়া ডট কম সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সূত্র বলছে আরাকান আর্মির জন্য সরবরাহ পথ খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর চাপ দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন মুলুকের আগ্রহ রয়েছে।
আমেরিকান জেনারেলের ঢাকা সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। ইন্ডিয়া ডট কমের প্রতিবেদন অনুসারে, সূত্রের খবর আরাকান আর্মি রাখাইনের সিত্তে, কিয়াকফিউ এবং মানাউং এই তিনটি শহর দখল করার জন্য একটি বিশাল সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনাও করছে।
এই শহরগুলি এখনও মায়ানমারের সামরিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আরাকান আর্মির আক্রমণ করলে সীমান্তের কাছে বাংলাদেশি ভূখণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সরবরাহ রুট খোলা রাখার কথাও বলা হয়েছে। যদিও জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রতিবেশী দেশের সংঘাতে তার বাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সতর্ক এবং এই ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া থেকে বিরত রয়েছেন।