গাজা সিটি: গাজা ভূখণ্ডে স্থলপথে হামলা চালিয়েও, এখনও পর্যন্ত হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে পারেনি ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। গাজায় মাটির নীচে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে হামাসের সুড়ঙ্গের জাল। সেই সুড়ঙ্গপথে হামাসের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করতে যাওয়া ইজরায়েলি বাহিনীর পক্ষে কঠিন। পদে পদে বিপদ ওঁত পেতে থাকতে পারে। তাই বিকল্প কৌশল নিল ইজরায়েল। গাজা ভূখণ্ডের নীচে হামাসের সূড়ঙ্গের সমুদ্রের জল পাম্প করা শুরু করল ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এভাবেই হামাসের ভূগর্ভস্থ পরিকাঠামো ধ্বংস করা যাবে বলে মনে করছে তারা। এই সুড়ঙ্গের জালই হামাসের লাইফলাইন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে, ইজরায়েলি বাহিনীর কর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সুড়ঙ্গে সমুদ্রের জল পাম্প করার প্রক্রিয়া এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ভূমধ্য সাগরের জল পাইপের মাধ্যমে পাম্প করে সুড়ঙ্গগুলি ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইজরায়েল জানিয়েছে, হামাসের এই সুড়ঙ্গের জাল ছিন্ন করতেই গাজায় তারা স্থলপথে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের মূল উদ্দেশ্যই ছিল সূড়ঙ্গ ধ্বংস করা। হামাস এই সুড়ঙ্গগুলি বিভিন্ন পণ্য পাচার করা থেকে শুরু করে ইজরায়েলে হামলা চালানোর মতো বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকে। ইজরায়েলের মতে, এই সুড়ঙ্গগুলিতেই রকেট এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্রও লুকিয়ে রেখেঠে হামাস। সুড়ঙ্গেই রয়েছে হামাসের কমান্ড সেন্টারও। একবার এই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করতে পারলে, হামাসের শিড়দাঁড়া ভেঙে যাবে বলে মনে করছে তেল আবিব।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জার্নালের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইজরায়েলি বাহিনীর মতে, বেশ কয়েকজন ইজরায়েলি পণবন্দিকে এই সুড়ঙ্গগুলিতে আটকে রাখা হতে পারে। সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চলার সময় বেশ কয়েকজন পণবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তারপরও, শতাধিক ব্যক্তি হামাসের হাতে আটকে আছে বলে দাবি ইজরায়েলের। সুড়ঙ্গ ভাসিয়ে দিলে, তাদের কী হবে, সেই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। পণবন্দিদের পরিবারের লোকজন প্রথম থেকেই পণবন্দিদের মুক্ত করার জন্য বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারেরক তাগিদ নেই বলে অভিযোগ করেছেন। এই ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা সুড়ঙ্গ প্লাবত না করার আবেদন জানিয়েছেন। সুড়ঙ্গগুলি ভাসিয়ে দিলে, তাদের প্রিয়জনদেরও মৃত্যু হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছিলেন, পণবন্দিরা যে এই সুড়ঙ্গগুলির ভিতরে নেই, সেই বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
তবে, সুড়ঙ্গ ভাসিয়ে দেব বললেই দিতে পারবে না ইজরায়েল। গাজার নীচে সুড়ঙ্গপথের মোট দৈর্ঘ ৪৮০ কিলোমিটারেরও বেশি বলে শোনা যায়। সেই সঙ্গে সুড়ঙ্গগুলি পুরু দরজা দিয়ে সুরক্ষিত, যে দরজাগুলি বিস্ফোরণেও ভাঙবে না। কাজেই, সম্পূর্ণভাবে সুড়ঙ্গগুলি প্লাবিত করতে তাদের কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।