
ইতিহাসে এই প্রথমবার! ইজরায়েলি নৌসেনা দেশের জলসীমান্তকে পাহারা দিতে ‘ড্রোন’ নামাল। অবশ্য নামেই ড্রোন, কাজে একেবারে চালকবিহীন যুদ্ধজাহাজ। আশেপাশে ভাসমান জাহাজের ছবি তোলা, সমুদ্রপথে নজরদারি চালানো, প্রয়োজন বুঝে সেনাকে স্পেশ্যাল অ্যালার্ট পাঠানোর মতো সব কাজ কোনও চালক ছাড়াই করতে পারবে এই ড্রোন বোটগুলি। ইজরায়েলি সেনার এই পদক্ষেপেই স্পষ্ট, ভবিষ্যতে যে কোনও যুদ্ধের জন্য আজই নিজেদের সবরকমভাবে ভাবে প্রস্তুত রেখেছে জেরুজালেম।
ইজরায়েলি নৌসেনা সে দেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জলসীমান্তে (EEZ) এই চালকবিহীন ‘ড্রোন’ জাহাজগুলি নামিয়েছে। ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ সূত্রে খবর, এখন মূলত নজরদারির কাজে এগুলি ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই এই ড্রোন বোট ছবিও পাঠাতে শুরু করেছে। ইজরায়েলি জলসীমান্তে কেউ অনুপ্রবেশ করল কি না, সেদিকে কড়া নজর রাখবে ড্রোন বোট। পাশাপাশি, নিজেদের জাহাজ ও অন্যদেশের জাহাজের উপরেও নজরদারি চালাবে।
ইজরায়েলি সেনা তাদের মেরিটাইম কমান্ড সেন্টারে বসে এই ড্রোন বোট থেকে পাঠানো তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করবে। প্রয়োজন বুঝে জলপথে বাড়তি সেনা মোতায়েন করবে। এক অতন্দ্র প্রহরীর মতো এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন পাহারা দিতে পারবে নয়া ড্রোন বোট। এতদিন ইজরায়েলি আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রাখা হত আনম্যানড এরিয়াল ভেহিক্যাল মাধ্যমে কিন্তু এই প্রথমবার জলেও প্রায় একই একই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করল আইডিএফ। ইজরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটিকেও পাহারা দেবে এই নয়া ড্রোন বোট।
এমনিতেই ইজরায়েলের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের জলসীমা নিয়ে বিবাদ লেগেই রয়েছে। গাজা, লেবানন ও সাইপ্রাসের সঙ্গে জলসীমান্ত নিয়ে তুমুল বিবাদ রয়েছে ইজরায়েলের। তার মধ্যে আবার সম্প্রতি নিজেদের জলসীমান্তের একটা বড় অংশকে EEZ বলে ঘোষণা করার পর থেকে এই এলাকার স্থিতাবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই এবার নিজেদের জলসীমান্তে ড্রোন বোট নামাল ইজরায়েল।
এমনিতেই ড্রোন ব্যবহারে ইজরায়েলের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। হেরনের মতো চালকবিহীন ড্রোনই হোক বা হ্যারপের মতো আত্মঘাতী ড্রোন– শত্রুকে কচুকাটা করতে সিদ্ধহস্ত ইজরায়েল। যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর স্ট্র্যাটেজির উপর নজরদারি বা হামলা – দুই চালাতেই দক্ষ ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স। ইজরায়েলের এক একটি ‘হার্মিজ ৯০০’ মিডিয়াম সাইজ ড্রোনও ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩০ হাজার ফুট উচ্চতায় এক থেকে দুদিন উড়তে পারে। এক একটি ‘আইএই হেরন’ ২৫০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক নিয়ে উড়তে পারে। এছাড়াও ইজরায়েলের কাছে রয়েছে অভেদ্য আয়রন ডোম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যা হামাসের প্রায় সবকটি রকেট হামলাকেই রুখে দিয়েছে।