
নয়াদিল্লি: আর পাক অধ্যুষিত কাশ্মীর নয়। গোপন ঘাঁটি পরিবর্তনের সময় যে এসে গিয়েছে, তা আগেই টের পেয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি। অপারেশন সিঁদুর সেই ঠিকানা বদলের উপলক্ষ্যকেই যেন পূর্ণ করেছে। কাশ্মীর থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে নিয়ে আফগানিস্তান লাগোয়া খাইবার পখতুনের দিকে যাচ্ছে একের পর এক পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী।
সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জইশ-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদীনের মতো পাকিস্তানের অন্যতম জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি তাদের সদর ঘাঁটির ঠিকানা বদল করছে। পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীর থেকে সরে গিয়ে আফগানিস্তান লাগোয়া খাইবার পখতুনই এখন তাদের নতুন ঠিকানা।
কিন্তু হঠাৎ করেই কেন এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল তাদের? প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ সূত্র মারফৎ পিটিআই জানতে পেরেছে যে ভারতীয় সেনার অভিযানের জেরেই একেবারে ক্ষান্ত হয়ে পড়েছে তারা। গত মে মাসেই পহেলগাঁও সন্ত্রাস হামলার বদলা হিসাবে অপারেশন সিঁদুর অভিযান করে ভারতীয় সেনা। রাতের অন্ধকারেই পাক অধ্যুষিত কাশ্মীরে ঢুকে একের পর এক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেশের বায়ুসেনা। এই হামলায় শেষ হয়ে যায় জইশ-প্রধান মাসুদ আজহারের গোটা পরিবার। ধ্বংস হয়ে যায় হিজবুল গোষ্ঠীর ঘাঁটিও। যা আজও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সেই হামলার কারণেই ভয় পেয়েছে পাকিস্তানের অন্যতম দু’টি জঙ্গি গোষ্ঠী। পাশাপাশি, তাদের সদর দফতরগুলির ঠিকানা গোটা বিশ্বের কাছে হয়ে গিয়েছে উন্মুক্ত। এই পরিস্থিতি নতুন ঠিকানা খোঁজা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই বললেই চলে। কিন্তু খাইবার পখতুনে কি নিজেদের জমি তৈরি করতে পারবে পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীগুলি?
আফগানিস্তান লাগোয়া হওয়ায় খাইবার পাখতুনের একটা বড় অংশ ‘অলিখিত’ ভাবে নিজেদের দখলে রেখে দিয়েছে তালিবার গোষ্ঠী। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে সেই সব এলাকায় পা মারাতে ভয় পায় পাকিস্তানি সেনাও। মাঝে মধ্যেই হামলার মুখেও পড়তে হয় তাদের। আবার কাবুলিওয়ালাদের দেশ ‘দখলের’ পর পাকিস্তানিদের সঙ্গে আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক হয়েছে তালিবানদের। এই পরিস্থিতিতে নতুন ঠিকানা জইশ কিংবা মুজাহিদীনদের জন্য কতটা নিরাপদ, সেই নিয়ে একটা আশঙ্কা থাকছেই।