
শেখ হাসিনার বিচার করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধী ট্রাইব্যুনাল না আইসিটি। সেই বিচারে হাসিনাকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছে তারা। আর এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে একটি শব্দ। ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’। বেশ মজাদার শব্দ না? হয় এই শব্দ আপনি আগে শুনে বেশ মজা পেয়েছেন আর নাহলে এখন শুনে আপনি ভাবছেন আরিব্বাস, এই ব্যাপারটা কী? কিন্তু এই শব্দের আসল অর্থ কী? এই শব্দের উৎসই বা কী, জানেন? অস্ট্রেলিয়া তো ক্যাঙারুদের একমাত্র বাসস্থান। তবে কি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্ত এই শব্দ? বা সত্যি সত্যিই অস্ট্রেলিয়ার আদালতকে ক্যাঙারু কোর্ট বলে? নাকি ক্যাঙ্গারুদের অন্য কোনও কিছুর সঙ্গে যুক্ত এই শব্দ?
না, এটা শুধু আপনি ভাবছেন, এমনটা নয়। অনেকেই এই বিষয়টা এমন করেই ভাবে। তবে, বাস্তবের সঙ্গে এই বহুল প্রচলিত ধারণার কোনও মিল নেই। এটি আসলে একটি আমেরিকান শব্দ। যা কোনও অনানুষ্ঠানিক, অন্যায্য বা প্রহসনমূলক বিচার প্রক্রিয়াকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেখানে আইনের যথাযথ প্রয়োগ মানা হয় না।
আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, এই শব্দটির জন্ম অস্ট্রেলিয়ায় নয়। এটি প্রথম ছাপা অক্ষরে ব্যবহার হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ১৮৪৯ সালের ক্যালিফোর্নিয়া গোল্ড রাশ-এর সময় এই শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর প্রধান কারণ ক্যাঙ্গারুর মতো লাফিয়ে চলা। অর্থাৎ, যে আদালত আইনি প্রক্রিয়াগুলি ‘লাফিয়ে’ এড়িয়ে যায়, বা কোনও প্রমাণের তোয়াক্কা না করে দ্রুত ‘লাফিয়ে’ সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। অন্য একটি তত্ত্বে আবার বলা হয়েছে, গোল্ড রাশের সময় যারা বিচারক সেজে দ্রুত মামলা শেষ করে অর্থ উপার্জন করত, তাদের বোঝাতেই এই শব্দটি জনপ্রিয় হয়েছিল।
অথচ আসল প্রাণীটি, ক্যাঙ্গারু, হল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ গিনির এক বিশাল মার্সুপিয়াল। আর এর সবচেয়ে মজার বিষয় হল, ক্যাঙ্গারুর দলকে ইংরেজিতেও কখনও কখনও ‘কোর্ট’ও বলা হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার বিচার শেষের পর আওয়ামি লিগ এই বিচারকে প্রহসন বলে উল্লেখ করেছে। ও তারা একে ‘ক্যাঙারু কোর্ট’-এর সঙ্গে তুলনাও করেছে। ফলে এমন কোনও দ্রুত ও প্রহসনমূলক বিচার ব্যবস্থার কথা শুনলেই মনে করবেন ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র কথা।