
একটাই লোকের রয়েছে ৩ টি পা, দু’টি পুরুষাঙ্গ। শুনে গল্পকথা বলে মনে হলেও এটাই সত্যি। এমনিতে আমরা কাউকে তিরস্কার করার সময় বলে থাকি ‘হাতির পাঁচ পা দেখেছে’। তা যে সত্যিই সম্ভব সেটা কোনও দিন ভেবে দেখেছেন?
ফ্রান্সেস্কো লেন্টিনি ওরফে ফ্রাঙ্ক লেন্টিনি, ১৮৮৯ সালের ১৮ মে ইতিলির রোসোলিনি শহরের ৮, গিন্টোলি স্ট্রিটে জন্ম। মারিয়া আলবেরিনোর ১২ সন্তানের মধ্যে পঞ্চম সন্তান ছিলেন ফ্রাঙ্ক। অদ্ভুত ভাবেই জন্মের সময় থেকেই ফ্রাঙ্কের একটি অতিরিক্ত পুরুষাঙ্গ এবং একটি অতিরিক্ত পা ছিল। ফ্রাঙ্কের জন্ম হয় যমজ সন্তানের সঙ্গে। অদ্ভুত ভাবে তাঁর যমজ ভাইয়ের শরীর ফ্রাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত ছিল। শিরদাঁড়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল লেন্টিনির শরীর। তার সঙ্গে ছিল একটি অতিরিক্ত পুরুষাঙ্গ এবং একটি সম্পূর্ণ পা। ছিল ১৬টি আঙুল এবং দু-জোড়া পায়ের পাতা।
আসলে ‘কনজয়েন টুইন’ নামক ভ্রুণের এক বিরল অবস্থাই এই অবস্থার জন্য দায়ী। এক্ষেত্রে মায়ের গর্ভে যমজ সন্তান থাকলেও, একটা সময়ের পরে একজনের মৃত্যু হয়। কিন্তু মৃত সেই সন্তানের কোনও কোনও অঙ্গ থেকে যায়। ফ্রাঙ্কের ক্ষেত্রেও ঘটে তেমনটাই।
নিজের চেহারার এই অদ্ভুত গড়নের জন্য জন্মের পরে বাবা-মা ফ্রাঙ্ককে কাকার কাছে রেখে আসেন। প্রথমে তৃতীয় পা ব্যবহার করতে না জানলেও সময়ের সঙ্গে সেটিই হয়ে ওঠে লেন্টিনির ইউএসপি। ১৮৯৭ সালে মাত্র ৮ বছর বয়সেই পুতুল শো থেকে শুরু করে, নানা প্রদর্শনীর আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে লেন্টিনি।
পরবর্তী কালে লেন্টিনি পরিবারের সঙ্গে মার্কিং যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন ফ্রাঙ্ক। যোগ দেন ‘রিংলিং ব্রাদার্স সার্কাসে’, শুরু করেন ‘দ্য গ্রেট লেন্টিনি শো’। ৩০ বছর বয়সেই মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন লেন্টিনি। নিজের ৪০ বছরের কেরিয়ারে কাজ করেছেন বহু বড় বড় সার্কাসে। নিজের আচার ব্যবহারের কারণে সহকর্মীদের বড় প্রিয় ছিলেন লেন্টিনি। ‘দ্য কিং’ বলে পরিচিত ছিলেন।
লেন্টিনির তিনটি পায়ের দৈর্ঘ্য ছিল ভিন্ন। একটির মাপ ছিল ৯৯ সেন্টিমিটার, অন্যটির মাপ ৯৭ সেন্টিমিটার, তৃতীয়টি ৯১ সেন্টিমিটার দীর্ঘ।
১৯০৭ সালে নিজের থেকে ৩ বছরের ছোট মার্কিন অভিনেত্রী থেরেসা মুরেকে বিয়ে করেন ফ্রাঙ্ক। লেন্টিনির ৪ সন্তান, জিউসেপিনা, নাটালে, ফ্রান্সেস্কো জুনিয়র এবং গিয়াকোমো। ১৯৩৫ সালে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় ফ্রাঙ্কের এরপরে আবার হেলেন শুপের সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেন লেন্টিনি।
১৯৬৬ সালে ৭৭ বছর বয়সে ২১ সেপ্টেম্বর নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফ্রাঙ্ক লেন্টিনি। ফুসফুসের সংক্রমণে মৃত্য হয় ‘দ্য কিং অব আমেরিকান সার্কাসের’।