মালে: মাথা নোয়াতে এক প্রকার বাধ্যই হল মলদ্বীপ। দীর্ঘদিন ধরেই এই দ্বীপরাষ্ট্রে তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট পরিচালনা করত ভারতীয় সামরিক কর্মীরা। একটি ডর্নিয়ার বিমান এবং দুটি হেলিকপ্টার উপহার দিয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু, চলতি বছরের শুরুতেই তাঁদের দেশ থেকে সকল ভারতীয় সামরিক কর্মীকে বের করে দেওয়ার ঘোষণা করেছিল মহম্মদ মুইজ্জু সরকার। পরে, অবশ্য এই বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিল দুই দেশ। সমঝোতা অনুযায়ী, ওই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট ভারতীয় অসামরিক কর্মীরা পরিচালনা করবেন বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু, তারপরও মুইজ্জু প্রশাসন বাধ সেধেছিল। ভারতীয় অসামরিক কর্মীদের, অসামরিক পোশাকে সামরিক ব্যক্তি বলে দাবি করেছিল তারা। তাদেরও বের করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন মুইজ্জু। তবে, শনিবার (২৭ জুলাই) থেকে ওই অসামরিক ভারতীয় কর্মীরাই ফের মলদ্বীপে ওই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট পরিচালনা করা শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এই এয়ারক্র্যাফ্টগুলি সাগরে নজরদারির পাশাপাশি, চিকিৎসার প্রয়োজনে বিভিন্ন দ্বীপ থেকে মলদ্বীপবাসীদের মালের হাসপাতালে আনার জন্য ব্যবহার করা হত। শনিবার থেকে ভারতীয় অসামরিক কর্মীরা ফের চিকিৎসার প্রয়োজনে ওই তিনটি এয়ারক্র্যাফ্ট চালানো শুরু করেছেন। মলদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স বা এমএনডিএফ জানিয়েছে ডর্নিয়ার ফ্লাইট এবং হেলিকপ্টারগুলির মাধ্যমে ফের রোগীদের মালেতে নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি, মহম্মদ মুইজ্জু চিনপন্থী বলেই পরিচিত। তাঁর প্রচারের মূল বক্তব্যই ছিল ইন্ডিয়া আউট। তবে শনিবার, মলদ্বীপের ৫৯তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মালের যুব কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “একজন রোগীকে ভারতীয় এয়ারক্র্যাফ্ট ব্যবহার করে মালেতে নিয়ে আসা হয়েছে। এর জন্য আমি ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।”
মলদ্বীপের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত নভেম্বরে মুইজ্জু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকেই এই ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ভারতের সাহায্য নেবেন না বলে একগুঁয়ে জেদ ধরেছিলেন মুইজ্জু। তবে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থা দেখা দিলেও, ভারতীয় ডর্নিয়ার বিমান বা হেলিকপ্টারগুলি ব্যবহার না করার জন্য ইদানিং দেশের জনগণেরই সমালোচনার মুখে পড়েছিল মলদ্বীপ সরকার। তারপরই ডর্নিয়ার বিমান ও হেলিকপ্টারগুলি ব্যবহার করা ফের শুরু করল মলদ্বীপ। জানা গিয়েছে, ডর্নিয়ার বিমানটি এখন রয়েছে হানিমাধুতে। আর হেলুকপ্টারদুটি আছে, কাধধু এবং গানে। ২০২৬ সালে অবশ্য ভারতের সঙ্গে এই সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। মুইজ্জুর আমলে, কয়েকমাস আগেই, ন্যাশনাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করেছে মলদ্বীপ। একটি পুরোনো ড্যাশ ৮ বিমান এবং একটি সিপ্লেন চলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে।