
হতাশা মানুষকে কোথায় গিয়ে দাঁড় করাতে পারে তা মাঝে মাঝে আমাদের কল্পনার অতীত হয়ে দাঁড়ায়। কখনও কখনও সেই হতাশা মানুষকে নিজের জীবন শেষ করতে উদ্যত করে তোলে। কখনও আবার অন্যদের জীবনের ঝুঁকির কারণ হয়ে ওঠে। ঠিক যেমনটা হয়েছে ৬৭ বছরের বৃদ্ধ ওনের ক্ষেত্রে। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরে হতাশা তাঁকে এমন ভাবে গ্রাস করে যে ৬৭ বছরের ওই প্রৌঢ় আগুন ধরিয়ে দেন গোটা মেট্রো রেলে। যা ধরা পড়েছে মেট্রোর সিসিটিভি ক্যামেরায়। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল সেই ভিডিয়োই।
দক্ষিণ কোরিয়ার বাসিন্দা ওন। মে মাসের ৩১ তারিখে যাত্রা করছিলেন মেট্রো রেলে। সিউল মেট্রোর ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে মেট্রোতে আগুন ধরিয়ে দেন ওন।
আদালত প্রকাশ্যে আনে ওই ভিডিয়ো। সেখানে দেখা যাচ্ছে ওন নিজের ব্যাগ থেকে একটি বোতল বের করেন। তাতে পেট্রোল জাতীয় কোনও দাহ্য তরল পদার্থ ছিল। সেই তরল হঠাৎ করে যাত্রী বোঝাই ভিড় মেট্রোতে ছড়িয়ে দেন। যখন ওন ওই তরল পদার্থ ছড়িয়ে দিচ্ছেন তখনই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাকি যাত্রীরা।
যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় পালানোর জন্য। সেই সময় ওই দাহ্য তরলে আগুন ধরিয়ে দেন ওন। তাতেই দাউ দাউ করে আগুন চোখের নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে মেট্রোর কামরায়।
প্রশাসন জানায় ওনের এই কান্ড প্রায় ১৬০ জন যাত্রীর জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। যার মধ্যে ৬ জন গুরুতর আহত। আরও ২৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে বদ্ধ মেট্রোর কামড়ায় ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ২৩ জন যাত্রী।
서울지하철 5호선 방화범 CCTV
사망자 없는게 기적이네요 pic.twitter.com/IQMowGZkWH— 브이몬 (@XXV_mon) June 25, 2025
সরকারি আইনজীবি ইওনহাপ নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানান, ওন প্রচুর পরিমাণে গ্যাসোলিন ছড়িয়ে দিয়েছিল মেট্রোর কামড়ায়। তারপরেই তাতে অগ্নি সংযোগ করে। যার ফলেই মারাত্মক বিস্ফোরণের মতো ছড়িয়ে পড়ে আগুন এবং বিষাক্ত গ্যাস। এটা হত্যাকান্ড বা সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য।
বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ওই ভয়াবহ আগুনের ফলে একটি মেট্রো রেক সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে নষ্ট হয়েছে আরও দুটি রেক। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ওন বা ২২০,০০০ ডলারের ক্ষতি হয়েছে সরকারের।
ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, চলন্ত ট্রেনে অগ্নিসংযোগ এবং রেল সুরক্ষা আইন ভঙ্গের মতো ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।