কাঠমাণ্ডু: বারবার নেপাল। মৃত্যু হাজারের কাছে। ঘুমিয়ে প্রশাসন। আকাশপথে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাপথ হিসেবে ধরা হয় নেপালের আকাশকে। পাহাড়ে ঘেরা আকাশপথ, খারাপ আবহাওয়া এই জোনকে সবসময় বিপদের মুখে দাঁড় করিয়ে রাখে। হিসেব বলছে, নেপালে বছরে অন্তত একটি করে বিমান দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে। ১৯৬২ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৭৩টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে নেপালে। মৃত্যু হয়েছে ৯৫০ জনেরও বেশি মানুষের। এতগুলি দুর্ঘটনার বেশিরভাগই নেপালের দেশীয় বিমানসংস্থার। একই বিমানসংস্থার বিমান বারবার ভেঙে পড়ার পরেও সে দেশের সরকার তেমন কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ।
১৯৯১ সালের পরে নেপালে বেসরকারি উড়ান সংস্থার দরজা খুলে দেওয়া হয়। এতে নেপালের পর্যটন ও যাতায়াতে উন্নতি হয় ঠিকই। কিন্তু বাড়তে থেকে বিপদ। এতগুলি বিমান দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে নিরাপত্তার গাফিলতিকেই দায়ী করে এসেছে বিশ্বের নিয়ামক সংস্থাগুলি। পাশাপাশি চালকের অভিজ্ঞতার অভাব ও বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেও দায়ী করা হয়।
বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলি বহু পুরনো। অন্য দেশে বাতিল করে দেওয়া বিমান কিনে এনে, সেখানে ব্যবসা করছে বলেও আগে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার পর সঠিকভাবে তদন্ত না হওয়া। তদন্ত করে কারও গাফিলতি পেলে দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হয়না বলেও অভিযোগ। এর জেরেই ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নেপালের সব বিমান সংস্থাকেই ব্যান করে। তারপরেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। এর জেরে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলে বিমানযাত্রা।
২৫ মে, ২০০৪– ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান ভেঙে পড়ে লুকলার কাছে। ৩ জনের মৃত্যু হয়।
২১ জুন, ২০০৬– ধানক্ষেতে ভেঙে পড়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্স বিমান। ৬ জনের মৃত্যু হয়।
৮ অক্টোবর ২০০৮– ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান লুকলা বিমানবন্দরে নামার পর দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। ১৮ জনের মৃত্যু হয়।
১৫ ডিসেম্বর, ২০১০– তারা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান, যা ইয়েতি এয়ারলাইন্সেরই সংস্থা, তা নেপালের লামিদান্দা বিমানবন্দর থেকে টেক অফের পরেই ১৯ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ে।
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১– নেপালের বুদ্ধ এয়ারলাইন্স ত্রিভুবন বিমানবন্দরে নামার আগে ক্র্যাশ করে। ১৯ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬– নেপালে তারা এয়ারলাইনসের বিমান র্যাডার থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে নির্জন পাহাড়ে মেলে ধ্বংসাবশেষ। বিমানে ২৩ জন যাত্রী ছিলেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬– একটি ছোট বিমান ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ২ জনের।
২০১৪– নেপাল এয়ারলাইন্স-এর বিমান দুর্ঘটনায় ১৮ জনের মৃত্যু।
১২ মার্চ, ২০১৮– কাঠমাণ্ডুতে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৩৮ জনের বেশি।
২৯ মে, ২০২২– তারা এয়ারলাইন্স পোখরা বিমানবন্দর থেকে টেক অফের পর ২২ জন যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ে।
১৫ জানুয়ারি, ২০২৩– ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমান ৬৮ জন যাত্রী সমেত কাঠমাণ্ডুতে ভেঙে পড়ে।
২৪ জুলাই, ২০২৪– শৌর্য্য এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। ১৮ জনের মৃত্যু।