
আবুজা: সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল ভিডিয়োটি। সেই ভিডিয়োয় এক সুন্দরী যুবতীকে অদ্ভূত আচার-আচরণ করতে দেখা গিয়েছিল। তিন ছিলেন গারদের মধ্যে বন্দি। সারা গায়ে ছিল না কাপড়ের লেশ মাত্র। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায়, সমানে কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে যাচ্ছিলেন ওই যুবতী। এই ভিডিয়ো সামনে আসতেই, ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার ওগুন প্রদেশে। অবশেষে শুক্রবার (১ জুলাই) ওগুন রাজ্যের পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই ভিডিয়োটি রাজ্যের রাজধানী আবেকুটার এক থানার। আরও দাবি করা হয়েছে ওই তরুণী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন। পরণের সব জামা-কাপড় খুলে তিনি কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করছিলেন। আর তাঁর মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পিছনে এক ইন্টারনেট জালিয়াতের ‘মানি রিচুয়াল’ দায়ী বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র আবিম্বোলা ওয়ায়েমি জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ কমান্ড। তবে, ভাইরাল ভিডিয়োটির বিষয়টি জানে পুলিশ সদর দফতর। ভিডিয়োটির বিষয়ে খোঁজ-খবরও নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, ‘ইয়াহু বয়’ নামে পরিচিত এক ইন্টারনেট প্রতারক ‘মানি রিচুয়াল’, অর্থাৎ, অর্থ উপার্জনের জন্য তন্ত্রসাধনা করতে ওই তরুণীকে ব্যবহার করেছিল। সন্দেহভাজন ওই ইন্টারনেট প্রতারক, তরুণীর উপর তন্ত্রমন্ত্র এবং কালো জাদু প্রয়োগ করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে পুলিশের কাছে। তন্ত্রের প্রভাবেই তিনি কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করেছিলেন বলে দাবি করেছে রাজ্য পুলিশ বিভাগ। অভিযুক্ত ‘ইয়াহু বয়’কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অবিলম্বে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তারপরও একটা প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। কীভাবে ওই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা তরুণীর ওই নগ্ন ভিডিয়ো ভাইরাল হল? রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র ওয়ায়েমি জানিয়েছেন, নির্যাতিতা ওই তরুণীকে কোনও পোশাক ছাড়াই থানায় আনতে হয়েছিল। কারণ তিনি সেই সময় খুবই হিংস্র আচরণ করছিলেন। তাঁকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। এই কারণেই থানায় এনে একটি গারদে তাঁকে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এরপর অবিলম্বে পুলিশ তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। পুলিশের সহায়তাতেই তাঁকে নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সাফাই দেওয়ার পরও ওয়েয়েমি বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে জেনে রাজ্য পুলিশ কমান্ড অত্যন্ত বিস্মিত অবাক এবং বিব্রত। তিনি বলেন, ‘উল্লিখিত ভিডিয়োটি নির্যাতিতা নগ্ন এবং নিয়ন্ত্রণহীন থাকা অবস্থায় রেকর্ড করা হয়েছিল। আরও বিব্রতকর হল, সেই সময় তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন।’ পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় কীভাবে ভিডিয়োটি রেকর্ড করা হল, কীভাবেই বা সেটি সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চার বিষয় হয়ে উঠল, এই বিষয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার ল্যানরে ব্যাঙ্কোল, ভিডিয়ো উত্স রহস্য উদঘাটনের জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই বর্বর, অসভ্য এবং ঘৃণ্য ভিডিয়ো ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া নির্যাতিতা মর্যাদার অবমাননাই শুধু নয়, তাঁকে তীব্র মানসিক আঘাতও দিতে পারে। পুলিশ কমান্ড তাই কারা ওই ভিডিয়ো রেকর্ড করেছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছে, তাদের খুঁজে বের করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’