
ঢাকা: অশান্ত বাংলাদেশে চরমে হিন্দু-নিধনের ঘটনা। বৃহস্পতিবার রাতে তৈরি হওয়া উত্তেজনার শিকার হলেন এক হিন্দু ব্য়ক্তি। ফিরে এল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি। পিটিয়ে দেহ জ্বালিয়ে দেওয়া হল সে দেশের এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির। এবার এই ঘটনার নিন্দা করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও।
শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে বিদ্বেষের দেশ। উত্তেজনা চড়লেই সঙ্কটের মুখে পড়েন সেদেশের হিন্দু নাগরিকরা। বৃহস্পতিবার হাদির মৃত্যুর হাত ধরেই যেন ফিরে এল বাংলাদেশের সেই ছবি। গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার রাজপথে মাথায় লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে। যেহেতু জুলাই গণঅভ্য়ুত্থানের অন্যতম মুখ ছিলেন হাদি, সেহেতু তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়কে মাথায় রেখে সরকারি উদ্যোগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
কিন্তু মাথায় গুলি লাগায় হাদির শারীরিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় ওসমান হাদির। তারপরই বাংলাদেশ জুড়ে শুরু হয় ভারতবিরোধী স্লোগান। পথের দখল নেয় একাংশের উগ্রপন্থীরা। এই সময়ই ময়মনসিংহের ভালুকায় হামলার শিকার হন এক হিন্দু ব্য়ক্তি। নাম দীপু দাস।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওই হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেন একদল দুষ্কৃতী। এমনকি পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর দেহ গাছে বেঁধে তাতেই আগুন ধরিয়ে দেয় উগ্রপন্থীরা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভালুকা থানার অফিসার রিপন মিয়া জানিয়েছেন, ‘ধর্মীয় কটূক্তি করার কারণে এই হামলা করা হয়েছে বলেই শুনলাম। তদন্ত চলছে।’
এই হিন্দু-নিধনের ঘটনায় মুখ খুলেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অভিযুক্তদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। এদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইয়ং তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনও স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’ পাশাপাশি নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।