
ঢাকা: সাজার পরিমাণ বাড়ল বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এবার প্লট দুর্নীতি মামলায় হাসিনা-সহ তাঁর বোন এবং বোনঝিকে সাজা শোনাল ঢাকার বিশেষ আদালত। এই মামলায় শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বিচারক মহম্মদ রবিউল আলম নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও তাঁর কন্যা টিউলিপ সিদ্দিকও। উভয়কে মোট সাত বছর এবং দু’বছর কারাদণ্ডে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যা দিতে না পারলে অতিরিক্ত ছ’মাস থাকতে হবে জেলে। এক লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে রেহানাকেও।
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরত্ব। ১৯৯৫ সালে সেখানে শুরু হয়েছিল পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার বদল, সর্বোপরি জমি জট। নানা প্রতিকূলতার জেরেই কাজের কাজ কোনও কালেই হয়নি। এর মধ্য়েই ২০১০ সালে পূর্বাচলের জমি বন্টন বড় অভিযোগ। নাম জড়িয়ে যায় হাসিনার পরিবারেরও।
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি হতেই এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক বা দুর্নীতি দমন কমিশনের নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত। গত ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবার-সহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিক অর্থাৎ হাসিনার বোনঝি নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে মা শেখ রেহানা, বোন আজমিনা সিদ্দিক ও ভাই রাদওয়ান মুজিবের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে অবৈধ ভাবে প্লট বরাদ্দ করেছেন। তিনজনের জন্য মোট ১০ কাঠা জমি ‘আত্মসাৎ’ করেছেন বলেই অভিযোগ তোলেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে নেমে অভিযোগ ওঠে শেখ হাসিনা ও তাঁর পুত্র সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধেও। দায়ের হয় মোট ছ’টি মামলা। সোমবার যার একটিতে রায়দান করেছে বাংলাদেশের বিশেষ আদালত। ‘দুর্নীতি দমন আইনের-১৯৪৭’-এর ৫(২) ধারা ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মোট ১৭ জন অভিযুক্ত। হাসিনা, রেহানা এবং টিউলিপ বাদে বাকি ১৪ জন আসামীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট আদালত।