ইসলামাবাদ: প্রাণভয় ইমরান খানের। তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, বুধবার ফের এমনটাই বিস্ফোরক দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি দাবি করেন, ১৯৯৬ সালে বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিলেন, সেই সময় যেভাবে মুর্তাজা ভুট্টোকে যেভাবে পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে পাকিস্তানের পিএমএল সরকারও তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে পোস্ট করা ভিডিয়ো বার্তায় তিনি গত বছরের নভেম্বর মাসে যে প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গও টেনে আনেন।
তোশাখানা মামলায় সম্প্রতিই গ্রেফতারি থেকে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন ইমরান খান। বুধবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্য়ান ইমরান খান বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আমায় হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গত নভেম্বর মাসেই আমার উপরে গুলি চলেছিল। এবার নতুন করে আরও একটা পরিকল্পনা বানানো হয়েছে। আমি সকলকে এই বিষয়ে বলতে চাই। দেশের বিচারব্যবস্থা ও বিশেষ করে পঞ্জাব পুলিশকে বলছি।”
ইমরান খান দাবি করেন, ইসলামাবাদ ও পঞ্জাবের পুলিশ প্রধান এবং তাদের বেশ কিছু সহকারীরা মিলে তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে। লাহোরের জামান পার্কে তাঁর যে বাড়ি রয়েছে, তার বাইরেই হামলা চালানোর ছক কষা হয়েছে। তিনি বলেন, “কী প্ল্যান আপনাদের? আজ বা আগামিকাল জামান পার্কের বাড়ির বাইরে হামলা করবেন। আমাদের সমর্থকদের সঙ্গে দুটি দলকে মিশিয়ে দেওয়া হবে। এরপরে গুলি চালিয়ে চার-পাঁচজন পুলিশ কর্মীকে হত্যা করা হবে। এরফলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও পদক্ষেপ করবে এবং পাল্টা গুলিতে পিটিআইয়ের প্রচুর সমর্থক মারা পড়বেন। যেভানে মুর্তাজা ভুট্টোকে হত্যা করা হয়েছিল, ঠিক একই রকম পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তাঁর দলের কর্মীরা যাতে কোনওভাবেই পুলিশের চক্রান্তে পা না দেন এবং উসকানিতেও সাড়া না দেন, তার অনুরোধ করেন ইমরান খান। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পুলিশ যাই-ই করুক না কেন, আপনারা কোনওভাবে প্ররোচনায় পা দেবেন না। ওদের পরিকল্পনা বুঝুন। আমি জেলে যেতে রাজি আছি কিন্তু রক্তগঙ্গা বয়ে যাক, তা চাই না।”
দিন কয়েক আগে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে যখন ইমরান খান হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন, সেই সময়ও তাঁকে হত্যার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ইসলামাবাদে আদালতেই আমার জন্য মৃত্যুফাঁদ পাতা হয়েছিল। ২০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি, যারা নিজেদের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মী বলে দাবি করেছিলেন, তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন আমায় হত্যা করার জন্য।”
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ভাই মুতার্জা ১৯৯৬ সালে করাচিতে পুলিশের এনকাউন্টারে মারা যান। সেই সময় ক্ষমতায় ছিলেন ভুট্টোই। জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে পাকিস্তানের মিলিটারি বাহিনী পরিকল্পনা করেই মুর্তাজাকে হত্যা করেছিল।