
ইসলামাবাদ: নানা সমস্যায় জর্জরিত পাকিস্তান। স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে বালোচিস্তানে যেমন বিদ্রোহ বাড়ছে। তেমনই বাকি অংশেও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। প্রশ্ন উঠছে, পাকিস্তানের অবস্থা বাংলাদেশ ও নেপালের মতো হবে না তো? সাধারণ মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ পাক সরকারের উপর আছড়ে পড়বে না তো? এই পরিস্থিতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি রিপোর্ট ঘিরে শোরগোল পড়েছে। ওই রিপোর্ট বলছে, দেশের ৪০ লক্ষের বেশি নাগরিকের ফোনে আড়ি পেতেছে পাকিস্তান সরকার। দেশের নাগরিকদের ফোনে আড়ি পাততে ব্যবহার করা হয়েছে চিনা প্রযুক্তিও।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধু ফোন নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে গোপন নজরদারি। ২০২২ সাল থেকে এই নজরদারি চলছ বলে রিপোর্টে ফাঁস করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ফোন ট্যাপিং ও চিনের ইন্টারনেট ফায়ার-ওয়াল ব্যবহার করছে পাকিস্তান সরকার। লফুল ইন্টারসেপ্টম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (LIMS) এবং ওয়েব ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (WMS) ২ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চলছে জোড়া নজরদারি। যে কোনও নাগরিকের ফোন, ইন্টারনেটে আড়ি পাততে ব্যবহার করা হচ্ছে এই দুই প্রযুক্তি। সন্দেহ হলেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে নাগরিকের ফোন-এসএমএস। ইন্টারনেট পরিষেবা স্লো করে দেওয়া হচ্ছে বলেও উঠছে অভিযোগ।
পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (ISI) সবচেয়ে বেশি নজরদারি চালায় বালোচিস্তানে। অভিযোগ, আচমকাই গায়েব হয়ে যাচ্ছেন বালোচ আন্দোলনের নেতা, সাংবাদিকরা। সরকারি-বিরোধী কোনও ফোনালাপ, পোস্ট দেখলেই ধরপাকড়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রায় ৭ লক্ষ সরকারি বিরোধী ইন্টারনেট লিঙ্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানে। ইউটিউব, ফেসবুক, এক্স-এর মতো পরিষেবাতেও কোপ পড়েছে। এত বড় মাপের নজরদারি চিন ছাড়া কোথাও চলে না বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
২০২৪ সালে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের স্ত্রী বুশারা বিবির ফোনে কথোপকথন সামনে আসে। তা নিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে মামলা হয়। তখন পাকিস্তানের টেলিকম রেগুলেটর ফোন ট্যাপিংয়ের কথা স্বীকার করেছিল। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং আইএসআই। প্রশ্ন উঠছে, দেশের নাগরিকদের বাক-স্বাধীনতায় কি বিশ্বাস করেন না পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ?