
নয়া দিল্লি: সৌদি আরবের রিয়াধে সৌদি রাজপ্রাসাদ এবং ডিফেন্স হেড-কোয়াটার্সে তুমুল তৎপরতা। পাকিস্তানের হয়ে যুদ্ধে নামছে রয়্যাল গার্ড অফ সৌদি আরব। সৌদির রাজা সলমন আবদুল্লা আজিজের নির্দেশে কিছুক্ষণ পরই পাকিস্তান- আফগান সীমান্তে রওনা দেবে সৌদির সেনারা। যুদ্ধটা ওখানেই হচ্ছে কিনা। এখনও পর্যন্ত যেটা বললাম, সেটা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরকম কিছুই বাস্তবে হচ্ছে না। শাহবাজ শরিফ প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা সৌদি প্রশাসনকে ফোন করে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছিলেন বটে, কিন্তু সৌদি আরব ভদ্রভাবে বিষয়টা এড়িয়ে গিয়েছে।
সৌদি বিদেশমন্ত্রক পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে সংযত থাকার অনুরোধ করেছে। আলোচনার টেবিলে ফেরার আবেদন করেছে। ব্যাস, ওই পর্যন্তই। পাক- আফগান সীমান্তের দিকে আরও ব্যাপক সেনা সমাবেশ করছে তালিবান। সকালে ও রাতে অন্তত আড়াইশো সাঁজোয়া গাড়ি পাকিস্তান সীমান্তে পৌঁছেছে। আফগানিস্তানে পাক বায়ুসেনার হামলার পর থেকেই পাক- আফগান সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। শনিবারের পর রবিবারও রাতভর যুদ্ধ হয়। তো এই ঘটনার পর সৌদি আরব পাক সেনার হয়ে যুদ্ধে নামল না কেন? দু-দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তির কালি শোকানোর আগে চুক্তির কথা ভুলে গেল সৌদি আরব? এই প্রশ্ন তো উঠবেই।
এর একটাই উত্তর। যাই হোক না কেন, সৌদি আরব কখনই পাকিস্তানের হয়ে যুদ্ধে নামবে না। দু-দিন আগে পর্যন্ত এটা স্রেফ সম্ভাবনা ছিল। এখন এটাই বাস্তব। এটাই ঘটনা। এমনিতে তালিবানদের পাল্টা হামলায় পাকিস্তান ধাক্কাটা বেশ ভালই খেয়েছে। নিহতের সংখ্যা নিয়ে দু-পক্ষই আলাদা আলাদা দাবি করছে। এরই মধ্যে পাক সেনার স্বীকারোক্তি, তালিবানদের সঙ্গে সংঘর্ষে শনিবার রাতে ২৩ জন পাক সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। রবিবার রাতে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
যুযুধান দুই দেশই জানে, যে কোনও মুহূর্তে আবার মারমার কাটকাট সংঘর্ষ বাঁধতে পারে। তাই দু-পক্ষই প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে সৌদি আরব। চুক্তির মূল কথা – দুই দেশের মধ্যে কোনও দেশের উপর হামলা হলে অন্য দেশ তা নিজের উপর হামলা বলে ধরে নেবে। এবং বন্ধু দেশের সঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধে নামবে।
সৌদি আরব বা সৌদি রাজপরিবার পাকিস্তানকে কোনও গুরুত্বই দেয় না, তাঁরা হঠাত্ পাকিস্তানের সঙ্গে এমন একটা চুক্তি করতে গেল কেন? সৌদি- পাক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্রেফ একটা প্রেশার ট্যাকটিক্স। আফগান তালিবানদের অভিযোগ, করাচি ও ইসলামাবাদ এয়ারপোর্টে থেকে ঘুরপথে আইএস খোরাসান জঙ্গিদের বর্ডার এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এরা ইসলামিক স্টেটের হয়ে তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়বে। অদ্ভুত ব্যাপার। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ভাড়াটে জঙ্গি পাঠাচ্ছে একটা দেশের নির্বাচিত সরকার। এ শুধু পাকিস্তানেই সম্ভব। অবশ্য পাকিস্তানে আরও অনেক কিছুই সম্ভব। প্যালেস্তাইনীয়দের খুন করতে ভাড়াটে সেনা পাঠানোর কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান।