ইসলামাবাদ: নববর্ষ উদযাপন হবে না পাকিস্তানে। নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকর। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর), জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে কাকর বলেছেন, নববর্ষে উদযাপনে দেশবাসীকে সংযম ও নম্রতা প্রদর্শন করতে হবে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের সঙ্গে সংহতির প্রকাশের জন্য পাক সরকারের এই সিদ্ধান্ত। তিনি বলেছেন, “প্যালেস্তাইনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং আমাদের প্যালেস্তিনীয় ভাই ও বোনদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে, নববর্ষের উদযাপনের জন্য যেকোনও ধরনের অনুষ্ঠানের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে সরকারের পক্ষ থেকে।”
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ২০,০০০-এরও বেশি প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। শুধু তাই নয়, যুদ্ধের জেরে গাজার মোট বাসিন্দার প্রায় ৮৫ শতাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে তাঁদের জায়গা হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। ইজরায়েল বর্তমানে গাজায় স্থলপথে হামলা চালাচ্ছে। এর ফলে, আরও বহু গাজাবাসী ভিটেছাড়া হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাক প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েল গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু হওয়ার পর, প্রায় ৯০০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তিনি বলেন, “ইজরায়েল হিংসা ও অবিচারের সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছে। গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে নিরপরাধ শিশুদের গণহত্যা এবং নিরস্ত্র প্যালেস্তিনীয়দের গণহত্যার জন্য সমগ্র পাকিস্তানি জাতি এবং মুসলিম বিশ্ব ব্যথিত।”
কাকর জানিয়েছেন, পাকিস্তান প্যালেস্তাইনে সাহায্যের দুটি প্যাকেজ পাঠিয়েছে। আরও একটি প্যাকেজ পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কাকর আরও দাবি করেন, আন্তর্জাতিক মহলে প্যালেস্তিনীয় জনগণের দুর্দশা তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। ইজরায়েল গাজায় যে রক্তপাত ঘটিয়ে চলেছে, তা বন্ধের জন্যও পাকিস্তান সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুসলিম প্রধান পাকিস্তানে নববর্ষ উদযাপন হয় ঠিকই, তবে, বিভিন্ন চরমপন্থী ইসলামী গোষ্ঠীগুলি এই উদযাপনে বাধা দানের চেষ্টাও চালায়। বর্ষবরণের রাতে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে থাকে। এইবার আশা করা যাচ্ছে, সেই অবস্থা সৃষ্টির সম্ভাবনাই নেই।