ওয়াশিংটন: ২০২৪-এর জানুয়ারিতেই যাত্রা শুরু করছে বিশ্বের বৃহত্তম ‘ক্রুজ শিপ’, ‘আইকন অব দ্য সিস’। সদ্য ‘ট্রায়াল রান’ হল ‘রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল’ সংস্থার এই নবতম সদস্যের। দৈর্ঘ্য ১,২০০ ফুট, ওজন ২,৫০,৮০০ টন! এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে বড় ক্রুজ শিপ ছিল ‘ওয়ান্ডার অফ দ্য সিস’। তার থেকে আয়তনে ৬ শতাংশ বড় হতে চলেছে ‘আইকন অব দ্য সিস’। ৫,৬১০ জন যাত্রী এবং ২,৩৫০ জন ক্রু সদস্য – সব মিলিয়ে ৭,৯৬০ জন লোক এই বিশাল জাহাজে যাত্রা করতে পারবে। যাত্রা শুরুর পর, যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে ‘রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল’ সংস্থা। এই বিশালত্ব এবং যাত্রীধারণ ক্ষমতার সঙ্গে রয়েছে যুক্ত হয়েছে ‘এন্টারটেইনমেন্ট’। ওয়াটার স্লাইড, সুইমিংপুল, হ্রোয়ালপুল – সব মিলিয়ে জাহাজটিতে বিনোদনের ৪০টিরও বেশি উপায় রয়েছে বলে দাবি করেছে সংস্থা।
২০২২-এর এপ্রিলে, ফিনল্যান্ডের মেয়ার তুর্কু শিপইয়ার্ডে জাহাজটি তৈরি করা শুরু হয়েছিল। সম্প্রতি, সেখান থেকেই এটির ট্রায়াল রান হয়। ট্রায়াল রানে ‘আইকন অব দ্য সিস’ কয়েকশ মাইল পথ ভ্রমণ করেছে।
সেই সময় প্রধান ইঞ্জিন, হল, ব্রেক সিস্টেম, স্টিয়ারিং, শব্দ এবং কম্পন ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। ৪৫০ জন বিশেষজ্ঞ চার দিন ধরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জাহাজটিকে সমুদ্রযাত্রার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছেন।
চলতি বছরের শেষে আরেকটি ট্রায়াল হবে। তারপর, জাহাজটি যাবে আমেরিকায় মায়ামিতে। ২০২৪ সালের ২৭ জানুয়ারি সেখান থেকেই শুরু হবে আইকন অব দ্য সিস-এর প্রথম সমুদ্রযাত্রা।
ক্যারিবিয়ান সাগরের পূর্ব এবং পশ্চিম পথ ধরে নিয়মিত এক সপ্তাহের একেকটি সফর করার কথা ক্রুজ শিপটির। বাহামায়, কোকোকে নামে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান সংস্থার নিজস্ব একটি দ্বীপ আছে। সাত রাতের এক রাতে অতিথিদের সেই স্থানেও নিয়ে যাওয়া হবে।
৭ রাতের ইস্টার্ন ক্যারিবিয়ান ট্রিপে মায়ামি, ফিলিপ্সবার্গ, শার্লট আমালি এবং কোকোকে; অথবা, ব্যাসেটেরে, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, শার্লট আমালি এবং কোকোকে ভ্রমণ করা যাবে।
আর ৭ রাতের পশ্চিম ক্যারিবিয়ান ট্রিপে থাকবে মায়ামি, রোটান, কোস্টা মায়া, কোজুমেল এবং কোকোকে ভ্রমণ।
এবার জেনে নেওয়া যাক, জাহাজটির বিনোদনের ব্যবস্থা সম্পর্কে। বিশ্বের বৃহত্তম জাহাজটিতে রয়েছে – ওয়াটার পার্ক, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবার পৃথক এলাকা, পুল ডেক, অ্যাকোয়া ডোম, অ্যাকোয়া থিয়েটার, ২২০ ডিগ্রি দেখা যায় এরকম বিশাল জানালা, সত্যিকারের গাছপালা-সহ পার্ক, সুইম-আপ বার, একটি ইনফিনিটি পুল, ৭টি সিইমিং পুল, ৯টি হোয়ার্লপুল এবং আরও অনেক আমোদ-প্রমোদের ব্যবস্থা।
সবথেকে বড় আকর্ষণ অবশ্যই এর ওয়াটার পার্ক। এখানে থাকছে ছয়টি ওয়াটার স্লাইড। এর মধ্যে একটি ‘ওপেন ফ্রি-ফল স্লাইড’, একটি ‘ফ্যামিলি রাফ্ট স্লাইড’ এবং দুটি ‘ম্যাট-রেসিং স্লাইড’।
জাহাজটিতে ২৮টি বিভিন্ন ধরনের কেবিন থাকছে। ৮২ শতাংশ কক্ষে তিন বা তার বেশি অতিথি থাকতে পারবেন। ৭০ শতাংশ কক্ষের সঙ্গে থাকছে বারান্দা। প্রথম যাত্রার সমস্ত টিকিট ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।