
ব্যাঙ্কক: সম্ভবনা ছিল, সেটাই হল। ব্যাঙ্ককে আয়োজিত বিমস্টেক সম্মেলনের মাঝে পার্শ্ব বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অস্থিরতা ও সংখ্যালঘু অত্য়াচার নিয়ে বেশ কয়েক বার সুর চড়িয়েছিল ভারত। এমনকি, সংখ্যালঘু নিরাপত্তার খাতিরে ঢাকায় বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রিকেও পাঠানো হয়েছিল নয়াদিল্লির তরফে।
ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, পদ্মা পাড়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার বদলের পর থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক একটু নড়বড় হয়েছিল নয়াদিল্লির। এমনকি, সম্প্রতি চিনে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে ইউনূসের মন্তব্যে বিতর্ক চড়েছিল দেশের অন্দরে। আর সেই আবহেই শুক্রবার সুদূর ব্যাঙ্ককে শীর্ষ সম্মেলনের মাঝে পার্শ্ব বৈঠক সারলেন দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধান।
বৃহস্পতিবার সমাজমাধ্যম জুড়ে ভাইরাল হয়েছিল একটি ভিডিয়ো। যেখানে দেখা গিয়েছিল, থাইল্যান্ডে বঙ্গোপসাগরের দেশগুলিকে নিয়ে আয়োজিত বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজে অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গেই যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। নৈশভোজে পাশাপাশি বসেছিলেন তারা। দু’জনের মুখ গম্ভীর, নেই হাসি। এমনকি একে অপরের দিকে চোখাচুখিও করছেন না তারা। কিন্তু দিন পেরতেই অন্য ছবি। সম্মেলনের মাঝেই বৈঠক সেরে নিলেন দুই প্রধান।
তবে ইউনূসের সঙ্গে কী আলোচনা হল প্রধানমন্ত্রীর? সেই প্রসঙ্গে এখনও কোনও তথ্য মেলেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৈঠকের মাধ্য়মে ‘প্রতিবেশী গুরুত্ব’ নীতি ও সংযমের পরিচয় দিয়েছে নয়াদিল্লি। যখন ক্রমাগত দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে ‘ঢিলেমি’ দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতকে টপকে পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে সম্পর্কের মজবুতের চেষ্টা করেছে, সেই আবহে ‘নৈরাজ্যপূর্ণ’ বাংলাদেশকে ঠেলে দেয়নি ভারত।
দিন কতক আগেই চিন সফরে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করতে দেখা যায় মহম্মদ ইউনূসকে। তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বের সেভেন সিস্টার একেবারে অবরুদ্ধ রাজ্য। ওদের মহাসাগরের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তাই বলা যেতে পারে, সেখানে মহাসাগরের অভিভাবক আমরাই।’ ভারত নিয়ে এমন মন্তব্য করে যখন বিতর্কের মুখে ইউনূস, সেই আবহেই ‘সংযমী’ হয়ে তার সঙ্গে পার্শ্ব বৈঠক করতে ‘দ্বিধাবোধ’ করলেন না মোদী।