PM Modi in Putin Car: সওয়ার মোদী থেকে কিম! পুতিনের ‘অরাস’ টেক্কা দেবে ট্রাম্পের ‘বিস্ট’-কেও

Putin Car Specs: 'অরাস সেনেট'-এর ভিতরে আস্ত 'কমান্ড সেন্টার' নিয়ে ঘোরেন পুতিন। গাড়ির ভিতরে বসেই পরমাণু হামলার নির্দেশ দেওয়া যায়। গাড়ির ভিতরেই রয়েছে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা, এমনকী দরজা ছাড়াও একটি লুকানো 'এমার্জেন্সি এক্সিট'। এরকমই একটি গাড়ি কিম-কে উপহার পাঠিয়েছেন পুতিন।

PM Modi in Putin Car: সওয়ার মোদী থেকে কিম! পুতিনের অরাস টেক্কা দেবে ট্রাম্পের বিস্ট-কেও
এক গাড়িতে মোদী-পুতিনImage Credit source: PTI

| Edited By: Avra Chattopadhyay

Sep 09, 2025 | 5:31 AM

নয়াদিল্লি: শাংহাই সম্মেলন মিটে গেলেও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রেসিডেন্সিয়াল লিমুজিন ‘অরাস সেনেট’ নিয়ে আলোচনা থামছে না। যে গাড়িতে সওয়ার হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে উত্তর কোরিয়ার যুদ্ধবাজ কিম- সেই গাড়ির দুটি সাম্প্রতিক ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে রুশ গণমাধ্যম। আর তাকে কেন্দ্র করেই যত আলোচনা। একটি ভিডিওতে পুতিনের সঙ্গে মোদী, আরেকটিতে সওয়ার কিম। কিমের ভিডিও-টি আবার গাড়ির ভিতরে তোলা। যেখানে কিম ও পুতিন ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতো খোশমেজাজে গল্প করছেন।

‘অরাস’ বলছি বা লিখছি বটে, রাশিয়ানরা এই বিশেষ গাড়িকে বলেন, ‘অ-আস’। ইংরেজিতে ‘AWW’ মানে কিছু দেখে দৃশ্যত অবাক হওয়া ও ‘US’ মানে আমরা। সোজা বাংলায়, যে গাড়ি দেখে চমকে উঠতে হয়, সেটাই রাশিয়ার ‘হেড অফ দ্য স্টেট্’ পুতিনের নতুন বিলাসবহুল গাড়ি। শুধু তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান চেপেছেন বলে নয়, এই গাড়ি কিন্তু নিজ গুণেও বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়িগুলির মধ্যে একটি। বলতে গেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড যে ক্যাডিলাক লিমুজিনে চেপে ইউএস ওপেনের ফাইনাল দেখতে গেলেন, সেই ‘দ্য বিস্ট’-এর চেয়েও বহুগুণ বেশি নিরাপদ ও বিলাসবহুল।

২০১৮ থেকে এই গাড়িই পুতিনের বাহন। একে আদর করে পুতিন ঘনিষ্ঠরা বলেন, রাশিয়ান ‘রোলস রয়েস’। অরাস মোটরসের বানানো ৪.৪ লিটারের টুইন টার্বো ভি৮ ইঞ্জিনের গাড়িটি ৬০০ হর্সপাওয়ারের। রয়েছে ৯ স্পিড-অটোমেটিক ট্রান্সমিশন। ভারী ধাতব পাতে মোড়া গাড়িটি মাত্র ৬ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে ছুটতে পারে। টপ স্পিড ২৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।

গাড়ির নিরাপত্তার দিকেও রাখা হয়েছে বিশেষ নজর। রি-ইনফোর্সড ব্যালিস্টিক গ্লাসের জানলা রয়েছে এই গাড়িতে, যা কোনও বুলেট ভেদ করতে পারবে না। গাড়ির নীচে এমনই ধাতব পাত লাগানো যা বোমা বিস্ফোরণেও গাড়িকে সুরক্ষিত রাখবে। টায়ার এমন-ই যে ফ্ল্যাট অবস্থাতেও গাড়ি চলবে। এই গাড়িতে কখনই আগুন ধরবে না।

ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট খুবই খুঁতখুঁতে। তাই ‘অরাস সেনেট’-র ভিতরেই আস্ত ‘কমান্ড সেন্টার’ নিয়ে ঘোরেন তিনি। প্রেসিডেন্টের যাবতীয় কাজ-ই এই গাড়ির ভিতরে বসে করা যাবে। পরমাণু হামলার নির্দেশ দেওয়া থেকে শুরু করে ‘সিকিওর’ লাইনে যে কারও সঙ্গে যোগাযোগ- গাড়িতে বসেই করা যাবে। গাড়ির ভিতরেই রয়েছে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা, এমনকী দরজা ছাড়া একটি লুকানো ‘এমার্জেন্সি এক্সিট’-ও।

তবে সাত মিটার লম্বা এই ‘ভি-আর ১০’ লেভেলের আরমারড লাক্সারি লিমোর গাড়ির ওজন কত আঁচ করতে পারেন? কয়েক টন। মজার কথা, এই গাড়ি পুতিনের একার কাছে নেই। আরেকটি মডেল রয়েছে কিমের কাছেও। সেটা পুতিন-ই তাঁকে উপহার দিয়েসিলেন গতবছর। আসলে এই গাড়ি হল কূটনৈতিক সমঝোতার প্রতীক।

বাইরে থেকে যতটা নিরাপদ, এই গাড়ির অন্দরমহল ততটাই বিলাসবহুল ও আরামদায়ক। প্রিমিয়াম লেদারে মোড়া গদি, দামি কাঠের ফিনিশিং। ভিতরেই মেলে স্ময়ংক্রিয় ম্যাসাজের সুবিধা। রয়েছে গাড়িকে গরম ও ঠাণ্ডা করার বিশেষ যন্ত্র ও উপযুক্ত ভেন্টিলেশন। ১০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটলেও ভিতরে বসে টের পাওয়া যায় না কোনও ঝাঁকুনি।

রাশিয়াতে বছরে মাত্র ১২০টি গাড়ি তৈরি করে ‘অরাস’ সংস্থা। সেগুলিও আবার সিভিলিয়ান এডিসন। তা সত্ত্বেও এক একটি গাড়ির দাম পড়ে প্রায় ২.৫ কোটি টাকা। তবে প্রেসিডেন্সিয়াল গাড়ি শুধুমাত্র পুতিনের নির্দেশেই বানানো হয়। পুতিন নিজে ব্যবহারের জন্য ও বন্ধু রাষ্ট্রের প্রধানদের উপহার দিতে ব্যবহার করেন এই গাড়ি। ‘অরাস সেনেট’ ছাড়াও তিয়ানজিনে শি জিনপিংয়ের ‘হংগকি এল৫’ গাড়িতেও চেপেছেন মোদী। সেটাও নামেই গাড়ি, আসলে চিনা প্রযুক্তি ও শিল্পায়নের অগ্রগতির প্রতীক।