
নয়াদিল্লি: ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে ভোটপর্ব। কিন্তু তার আগেই যেন চরিত্র বদলাচ্ছে পদ্মপাড়। কখনও সীমান্তে সন্ত্রাস, কখনও বা জনসমক্ষে ভারতবিরোধিতা। এই বাংলাদেশ একাংশের কাছে খুব অচেনা। একইসঙ্গে ভারতের কাছেও এই সময়কালে ভারী গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কেন? তাঁর নেপথ্যে রয়েছে অনেকগুলি দিক।
প্রথমত, ভারত-পাক সীমান্তের মতো বাংলাদেশ সীমান্তেও জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাড তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে। এই প্রশ্ন তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে জম্মু-কাশ্মীরে বরফঢাকা, পাহাড়ে ঘেরা রাস্তায় লঞ্চপ্যাড দরকার। বাংলাদেশ সীমান্তে লঞ্চপ্যাড তৈরি হবে কেন? সেটা হলে তো ভারত খুব সহজে সেগুলি চিহ্নিত করে ফেলবে। প্রয়োজনে মিসাইল দেগে উড়িয়েও দিতে পারে।
একাংশের মতে, গোটা পরিকল্পনার নেপথ্যে পাক চর সংস্থা আইএসআই। তাঁদের মদতেই এই চক্রান্ত। সূত্রের খবর, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে লোকালয়ের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকবে এই লঞ্চপ্যাডগুলি। যা মূলত অস্থায়ী শেল্টার হিসাবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান-বাংলাদেশের কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো। পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দলে দলে জঙ্গিরা বাংলাদেশে আসছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত তাঁদের নতুন গন্তব্য।
দ্বিতীয়ত,আমেরিকা ও চিন। ফেব্রুয়ারিতে ভোটের আগেই বাংলাদেশের রাশ হাতে নিতে মরিয়া এই যুযুধান দু’দেশ। আমেরিকা ও চিনের কাছে বাংলাদেশের অঙ্কটা স্পষ্ট। আওয়ামী লিগ থেকেও নেই। সদ্য তৈরি হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি হৈ-হৈ করে জিতে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসবে, এমন কিছু এখনই ভাবা কঠিন। ভোটের মাঠে অনেকটা এগিয়ে থেকেই শুরু করছে বিএনপি। বিএনপিকে ঘিরেই নিজেদের মতো ঝাঁপাতে চাইছে চিন এবং আমেরিকার এজেন্ট-কূটনীতিকরা।
তৃতীয়ত, ভোটের পর ইউনূসের ভবিষ্যত। এটা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিজেও উদ্বিগ্ন, এমনটাই মনে করছেন একাংশ। তিনি রাষ্ট্রপতি হতে চাইলেও বিএনপি রাজি হবে কি? বিএনপির শীর্ষ নেতারা হাবেভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, ইউনূসের মতো ‘ক্ষমতালোভী’ লোককে বড় পদ দিলে হিতে বিপরীত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারেকের হাতেই।
চতুর্থ, জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং জামাত। এই দু’টি দলই নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। ইতিমধ্যেই জোট গড়ে ফেলেছে উভয় দল। তাঁদের কাছে তিনটি কমন ইস্যু। শেখ হাসিনার মুণ্ডপাত, ভারত বিরোধিতা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব। ভোটে মোটামুটি কিছু আসন পেলে এই দলগুলো ঠিক কোন পথে হাঁটবে, সে ব্যাপারে কেউই খুব একটা নিশ্চিত নয়। না বিএনপি, না আওয়ামী লিগ। ওখানে যা, যা হচ্ছে, সবটা ভারতের কাছে নিরাপত্তার পক্ষে বড় থ্রেট।