ধীরে ধীরে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ইউক্রেনের পরিস্থিতি। ক্রমশ সেনা সংখ্যা বাড়াচ্ছে রাশিয়া, একের পর এক শহরে হানা দিচ্ছে তারা। কিয়েভের পর এদিন খারকিভেও লাগাতার হামলা চালায় রুশ সেনা। এদিকে, পাল্টা জবাব দিচ্ছে ইউক্রেনের সেনাও। সাধারণ মানুষও যুদ্ধে যোগ দিচ্ছেন। ক্রেমলিনের তরফে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, ইউক্রেনের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বেলারুশে আলোচনায় বসতে আগ্রহী নন। ইউক্রেনের পরিস্থিতি দেখে নিন একনজরে-
শনিবার সারারাত ধরে কিয়েভে লাগাতার আক্রমণ চালালো রুশ সেনা। শনিবার মধ্যরাতেই দক্ষিণ কিয়েভ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ভাসিলকিভে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। একটি গ্যাস স্টেশনে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ায় বিস্ফোরণ হয়। ওই গ্যাস স্টেশন থেকে বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণের আশঙ্কায় শহর জুড়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে সোমবার অবধি কিয়েভে কার্ফু জারি করা হয়েছে।
ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে জোরকদমে চলছে উদ্ধারকার্য। এদিন ভোরেই দিল্লিতে এসে পৌঁছয় দ্বিতীয় উদ্ধারকারী বিমান। রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্ট থেকে ২৫০ জন ভারতীয়কে নিয়ে ফিরেছে বিমান। ইউক্রেন ফেরত ভারতীয়দের বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অসামরিক উড়ান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আজ আরও দুটি বিমান বাকি ভারতীয়দের নিয়ে দেশে ফিরবে।
ইউক্রেনে ঢুকে পড়লেও, রাশিয়ার সেনাকে জব্দ করছে সে দেশের মানুষেরা। ইউক্রেনের যে সংস্থা শহরের বড় বড় বিল্ডিং ও রাস্তা তৈরি এবং তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে, তার তরফে জানানো হয়েছে যে রুশ সেনাকে বিভ্রান্ত করতে রাস্তার ধারের সমস্ত চিহ্ন ও পথ নির্দেশিকা মুছে দেওয়া হয়েছে বা উপড়ে ফেলা হয়েছে। রাশিয়ার সেনা যেহেতু পথ চেনে না, বড় বড় শহরে ঢুকে তাদের হামলা চালাতে সাহায্য করছিল এই পথ নির্দেশিকাগুলিই। এবার তাদের বিপাকে ফেলতে সেই পথ নির্দেশিকাগুলি উপড়ে ফেলা হয়েছে।
কিয়েভের পর এবার খারকিভকেও নিশানা বানিয়েছে রুশ সেনা। রবিবার সেখানেও লাগাতার বিস্ফোরণ হয়েছে। রাশিয়ান সেনা সেখানের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খারকিভ প্রশাসনের প্রধান ওলেহ সিনেহুবোভ রবিবার জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনের সেনা রাশিয়ান বাহিনীকে শহরে ঢুকতে যথাসম্ভব বাধা দিচ্ছে। শহরের বাসিন্দাদের আপাতত বাড়ি থাকতে বলা হয়েছে।
একে একে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করছে বিভিন্ন দেশ। এবার ফিনল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডও জানাল তারা রাশিয়ার বিমান নামতে দেবে না। রাশিয়ার জন্য এয়ারস্পেস বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
যুদ্ধ লাগার পর থেকেই দেশ ছাড়তে শুরু করেছে ইউক্রেনের বাসিন্দারা। বিগত তিনদিনেই প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ স্লোভাকিয়া,রোমানিয়া ও হাঙ্গেরিতে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জুডোয় পারদর্শী। তিনি ব্ল্যাক বেল্টের অধিকারী। তবে ইউক্রেনের উপরে সামরিক অভিযান চালানোয় এবার আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশনের তরফেও পুতিনকে বয়কট করা হল।