গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করতে সব সময় সচেষ্ট উত্তর কোরিয়া। তাই তাকে আটকাতে নানা আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তবু সেই সব অস্ত্র তৈরি করার জন্য অবৈধভাবে নানা পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের সরবরাহ জারি রয়েছে। এই সব পণ্য ধবংসাত্মক অস্ত্র তৈরির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ককে হাতিয়ার করেই ক্রমাগত পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করছে উত্তর কোরিয়া। যা স্যাটেলাইট টাস্কিং সিস্টেমে যা সম্প্রতি ধরা পড়েছে।
ট্যাঙ্কার ‘ডায়মন্ড ৮’ স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে ধরা পড়েছে কী ভাবে একটি জাহাজ থেকে অন্য জাহাজে পেট্রোলিয়াম পণ্য গোপনে স্থানান্তরিত করা হয় এবং তা অবশেষে উত্তর কোরিয়ার বন্দরে এসে পৌঁছায়। গোপন এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই উত্তর কোরিয়াকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নতুন নতুন ধবংসাত্মক অস্ত্র নির্মাণের কাজ জারি রেখেছে।
সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের বিশ্লেষক লরেন সাং বলেন, “এটা ইঁদুর-বিড়ালের খেলার মতো। সর্বদা একে অপরের থেকে এগিয়ে থাকতে চায়। স্যাটেলাইট ডেটা ছাড়া কে কী করছে তা বোঝা সম্ভব নয়।”
বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুসারে, রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে এক মিলিয়ন ব্যারেলেরও বেশি তেল সরবরাহ করছে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য সৈন্য পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। তাই এই তেল সরবরাহ বলেই অনুমান।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অনুসারে, উত্তর কোরিয়া একমাত্র দেশ যে খোলা বাজারে তেল কিনতে পারে না। আবার উপহার হিসাবেও সর্বাধিক ৫০০,০০০ ব্যারেল পেতে পারে। উত্তর কোরিয়াকে বেশি পরিমাণে তেল সরবরাহ করা মানে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার অবমাননা করা। তবে স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়েছে কী ভাবে ফাঁকা ট্যাঙ্কার ভর্তি হয়ে ফিরে আসছে কোরিয়াতে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি বিবিসিকে বলেন, “ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে, রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার উপর নির্ভরশীল। তাদের সৈন্য আর অস্ত্র চাই। বিনিময়ে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে তেল পাঠাচ্ছে।”
সিউলের শীর্ষ নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিন ওন-সিক জানান রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে তার মহাকাশ কর্মসূচির জন্য আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য করছে বলেই মনে হয়।
তবে আসল চিন্তার বিষয় হল, কিম জন কিছুদিন আগেই রাশিয়াকে সাহায্যের পরিমাণ দ্বিগুণ করেছে। এখন প্রশ্ন হল তা হলে কোন নতুন সামগ্রী বিনিময় হতে চলেছে দুই দেশের মধ্যে?