
স্কটল্যান্ড: বরফে বড় বড় পায়ের ছাপ দেখে ‘ইয়েতি’ খুঁজতে গিয়েছিলেন ‘কাকাবাবু’। তারপর কী পাওয়া গিয়েছিল, তা বাঙালি পাঠকদের অনেকেরই জানা। তবে সে তো নেহাতই গল্প! এবার বাস্তবে এমনই এক রহস্যের সমাধান করতে মাঠে নেমেছেন বিশ্বের একাধিক বিজ্ঞানী। জলাশয়ে ‘দৈত্য’ খুঁজতে নামছে ড্রোন, ইনফ্রারেড ক্যামেরা। জলের তলায় বসছে হাইড্রোফোন, যদি ধরা পড়ে ‘দৈত্যে’র কন্ঠস্বর! ‘লচ নেস’ নামে এক স্কটিশ হ্রদে শুরু হচ্ছে বিরাট তল্লাশি অভিযান। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে দৈত্যের উপস্থিতি শুনতে আজগুবি মনে হলেও বিজ্ঞানীদের একটা অংশ কিন্তু বিষয়টাকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।
এই হ্রদের জলে বা আশপাশে নাকি অনেকেই কোনও এক রহস্যময় প্রাণীর উপস্থিতি উপলব্ধি করেছেন। কখনও জল কাঁপিয়ে মাথা তুলতে দেখা গিয়েছে তাকে, কখনও আবার দেখা গিয়েছে পায়ের ছাপ। সত্যিই কি কোনও অদ্ভুত প্রাণী? নাকি অন্য কোনও রহস্য আছে এর পিছনে? সেটা অবিলম্বে বের করে আনতেই এবার পুরোদমে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। দৈত্য খুঁজতে ব্যবহার করা হচ্ছে থার্মাল স্ক্যানার, নৌকা, ইনফ্রারেড ক্যামেরা ও জলের তলায় লাগানো হবে হাইড্রোফোন। প্রায় ৩৬ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে থাকা এটাই ইউকে-র সবথেকে বড় হ্রদ।
বহু বছর ধরে এই ‘লচ নেস মনস্টারে’র কথা শুনেছেন ইউকে-র বাসিন্দারা। বহু যুগ আগের অনেক লেখা বা ছবিতে এই রহস্যের উল্লেখ রয়েছে। এক সাঁতারুকে নাকি সে আক্রমণ করেছিল বলেও শোনা যায়। ১৯৩৩ সালের মে মাসে এক দম্পতি ওই হ্রদে নৌকাভ্রমণ করছিলেন, সেই সময় তাঁরাও নাকি এক বিশালাকার প্রাণী দেখেছিলেন জলের মধ্যে।
এখানেই শেষ নয়। পরবর্তীতে ইংরেজি পত্রিকা ‘ডেলি মেল’ এক ব্যক্তিকে ওই অনুসন্ধানে নিযুক্ত করে। পরবর্তীতে সেই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সেই ছবি। দেখা যায় এক বিশাল আকৃতির পায়ের ছাপ। ২০ ফুট লম্বা কোনও প্রাণীর পায়ের ছাপ বলে মনে করা হয়েছিল সেই ছবি দেখে। ১৯৩৪ সালে এমনই এক ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন পেশায় চিকিৎসক রবার্ট উইলসন। মনে করা হয়ে ‘দৈত্য’ যখন মাথা তুলছিল, সেই সময়কার ছবি এটি। ডেলি মেল পত্রিকা সেই ছবি প্রকাশ করার পর ওই ‘দৈত্যে’র উপস্থিতির কথা জেনে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব।
এরপর বহু গবেষণা হয়েছে, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। ১৯৭২ সালে তল্লাশি করার সময় তেমন কিছু পাওয়া যায়নি, তবে ১৯৮৭ সালে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে অনুসন্ধান চালানোর পর বলা হয় এক অদ্ভুত আকারের অপরিচিত বস্তুর উপস্থিতি রয়েছে। আর এবার একেবারে কোমর বেঁধে নামছেন বিজ্ঞানীরা।