Dire Wolves: সাড়ে ১২,০০০ বছর আগের নেকড়ের জন্ম দিল মানুষ!
Dire Wolves: ১২,৫০০ বছর পরে আবার এই ধরিত্রীর বুকে জন্ম নিল সেই ডায়ার শেয়াল। কোথা থেকে এল? তাহলে এতদিন মানস চোক্ষের আড়ালে ছিল এই উপজাতি। না, এই শেয়ালের জন্ম দিয়েছে খোদ মানুষই।

‘জাতিস্মর’ এই শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই বেশ পরিচিত। যার পুনর্জন্ম হয়েছে যাঁর। পূর্ব জন্মের কথা মনে আছে এমন কেউ। এবার বিজ্ঞান জন্ম যেন ঘটিয়ে ফেলল ঠিক তেমনই কিছু একটা। আজ থেকে প্রায় ১২,৫০০ বছর আগে পৃথিবীর বুকে বাস করত এক সাঙ্ঘাতিক হিংস্র শেয়ালের উপজাতি। নাম তার ‘ডায়ার উলফ'(dire wolf)। সময়ের সঙ্গে অভিযোজন করতে না পেরে সাড়ে বারো হাজার বছর আগে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল বিশেষ প্রজাতির এই শেয়াল।
১২,৫০০ বছর পরে আবার এই ধরিত্রীর বুকে জন্ম নিল সেই ডায়ার শেয়াল। কোথা থেকে এল? তাহলে এতদিন মানস চোক্ষের আড়ালে ছিল এই উপজাতি। না, এই শেয়ালের জন্ম দিয়েছে খোদ মানুষই। ল্যাবে গবেষণার সাহায্যে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারড সেল তৈরি করে জন্ম দেওয়া হয়েছে দুটি পুরুষ ডায়ার উলফের। তাদের এক জনের নাম রোমুলাস এবং অন্য জনের নাম রেমাস।
মাত্র ৬ মাস বয়স রোমুলাস এবং রেমাসের অথচ এখনই তাদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ ফুট। ওজন ৩৬ কেজির বেশি। সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে , এই কাজ বাস্তবে সম্পন্ন করেছে টেক্সাস-ভিত্তিক কলসাল বায়োসায়েন্সেস নামক কোম্পানি। তারাই জানিয়েছে, প্রাচীন ডিএনএ, ক্লোনিং এবং জিন এডিটিং-এর মাধ্যমে জন্ম দেওয়া হয়েছে ডায়ার উলফের। প্রসঙ্গত, বলে রাখা ভাল, ইংরেজি ওয়েব সিরিজ, ‘গেম অব থ্রোনস’-এ এই ডায়ার উলফকে দেখানো হয়েছিল।
Meet Romulus and Remus—the first animals ever resurrected from extinction. The dire wolf, lost to history over 10,000 years ago, has returned. Reborn on October 1, 2024, these remarkable pups were brought back to life using ancient DNA extracted from fossilized remains.
Watch… pic.twitter.com/XwPz0DFoP5
— Colossal Biosciences® (@colossal) April 7, 2025
বিজ্ঞানীরা জানান এই নেকড়ের সেল প্রস্তুত করতে, নিকটতম জীবিত আত্মীয়, ধূসর নেকড়ের, ডিএনএ ব্যবহার করেন। ধূসড় নেকড়ে বা গ্রে উলফের আকারে আরও বড়, মোটা লোমশ এবং শক্তিশালী চোয়ালের অধিকারী এই নেকড়ে এক সময় ছিল উত্তর আমেরিকার ত্রাস। প্রথম শিকারিদের তালিকায় নাম থাকত তার।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) উভয়েরই জেনেটিক্সের অধ্যাপক এবং কলসালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জর্জ চার্চ টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, “আমরা কেবল এক শিশি রক্ত নিতে পারি, ইপিসি আলাদা করতে পারি, কালচার করতে পারি এবং সেগুলো থেকে ক্লোন করতে পারি। এর ক্লোনিং দক্ষতা বেশ ভালো।”
খবর প্রকাশ্যে আসতেই নিজের এক্স মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। জন্মের পর, কয়েকদিন দুই ছানাকে সারোগেট মায়ের কাছে রাখা হয়। পরে কলোসাল টিম তাদের বোতল থেকে খাওয়ানো শুরু করে। কোম্পানি জানিয়েছে, রোমুলাস এবং রেমাস সুস্থ তরুণ ভয়ঙ্কর নেকড়ের মতো জীবনযাপন করছে।
Please make a miniature pet wooly mammoth https://t.co/UxoIWmzq6h
— Elon Musk (@elonmusk) April 7, 2025
যদিও অন্যান্য বিদ্যমান নেকড়ে প্রজাতির থেকে এদের আচরণ ভিন্ন। মানুষের উপস্থিতিতে যে উচ্ছ্বাস দেখানোর কথা তা এঁদের মধ্যে নেই। রোমুলাস এবং রেমাস মানুষের থেকে তাদের দূরত্ব বজায় রাখে। কেউ এগিয়ে গেলে তারা পিছু হটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আচরণ ভয়ঙ্কর নেকড়েদের বৈশিষ্ট্য। এরা একা থাকতে চায়।
এই কলোসাল সংস্থাটি ডায়ার উলফ ছাড়াও ম্যামথ, ডোডো এবং তাসমানিয়ান বাঘের মতো হারিয়ে যাওয়া প্রাণীদের ফিরিয়ে আনতে চায়।
একটি প্রেস বিবৃতিতে কলোসালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও বেন ল্যাম বলেন, “আমারা ১৩,০০০ বছরের পুরনো একটি দাঁত এবং ৭২,০০০ বছরের পুরনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে সুস্থ নেকড়ের জন্ম দিয়েছি।”
আপাতত রোমুলাস এবং রেমাসকে ২০০০ একর জমির কটি বন্য পরিবেশে ১০ ফুট উঁচু বেড়া দিয়ে ঘেরা স্থানে রাখা হয়েছে। যেখানে নিরাপত্তা কর্মী, ড্রোন এবং লাইভ ক্যামেরা ফিড দ্বারা তাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়।
