ঢাকা:বাংলাদেশ ভেঙে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র চলছে। গুরুতর অভিযোগ করলেন সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, একটি শক্তিশালী দেশ বঙ্গোপসাগরে ঘাঁটি বানাতে চায়। তিনি তা হতে দিচ্ছেন না বলেই তাঁর সরকারের সামনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাঁকে ভোটের আগে এই ঘাঁটি বানানোর অনুমতি দেওয়ার বদলে, সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বলে, অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী। তবে, কোনও বিশেষ দেশের নাম করেননি হাসিনা।
আওয়ামি লিগের নেতৃত্বে ১৪ দলের জোট সরকারের নেত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, এই ১৪টি দলের শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকের শুরুকে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি যদি এক বিশেষ দেশকে বাংলাদেশে তাদের এয়ারবেস বানাতে দিতাম, তাহলে আমার আর কোনও সমস্যা থাকত না। জানুয়ারির ভোটের আগে আমায় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, এয়ারবেস বানাতে দিলে, আমার পুনর্নির্বাচন নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না। এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি আমায় এই প্রস্তাব দিয়েছিল।”
হাসিনা দাবি করেছেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাস বিক্রির চুক্তিতে রাজি হননি তিনি, তেমনই এইবারও বিমানঘাঁটি বানানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। হাসিনা বলেন, “শক্তিশালী দেশটি আমাদের সেই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। গ্যাস বিক্রিতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয়নি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মতো দৈন্যতায় ছিলাম না কখনও। আমি স্পষ্ট বলেছি, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছি। আমি দেশের একাংশ ভাড়া দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাই না।”
তবে শেখ হাসিনার দাবি, বাংলাদেশে এয়ারবেস বানিয়েই ক্ষান্ত হবে না দেশটি। ইন্দোনেশিয়ার ভেঙে যেমন পূর্ব তিমুর তৈরি করা হয়েছিল, সেই রকমই বাংলাদেশ ও মায়ানমারের একটা অংশ নিয়ে একটা খ্রিস্টান দেশ তৈরির চক্রান্ত চলছে। হাসিনা বলেন, “ভারত মহাসগাগরের এই শান্তিপূর্ণ জায়গাটার উপর তাদের নজর। এখানে বেস বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়? আমার যুদ্ধ ঘরে-বাইরে, সব জায়গায়। পূর্ব তিমুরের মত বাংলাদেশের একটি অংশ নিয়ে, তারপর চট্টগ্রাম, মায়ানমার মিলে এখানে একটা খ্রিষ্টান দেশ বানাবে। বঙ্গোপসাগরে একটা ঘাঁটি করবে। প্রাচীনকাল থেকেই বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে আসছে। অনেকের চোখ আছে এই জায়গাটার দিকে। আমি সেটা হতে দেব না। এটা আমার অপরাধ হবে।”
শেখ হাসিনা কোনও দেশের নাম না করলেও, তাঁর ইঙ্গিত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে, সেটা স্পষ্ট। নির্বাচনের আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাসিনা প্রশাসনের সম্পর্কের উত্তেজনা বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বারংবার বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অন্যদিকে, হাসিনা প্রশাসন অভিযোগ করেছে, তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করছে আমেরিকা। এবার, শেখ হাসিনার এই মন্তব্যের পর জল কোনদিকে গড়ায়, সেটাই দেখার।