কলোম্বো: চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) পরিস্থিতি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের চড়া দাম, ওষুধের অপ্রতুলতা, জ্বালানির লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল হয়ে সেদেশের মানুষ পথে নামতে বাধ্য হয়েছিল। জনগণের চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষ (Mahinda Rajapaksa)। রনিল বিক্রমাসিংঘে নতুন করে দ্বীপরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন। এখনও অবধি সেদেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, এর মধ্যেই শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের ভাই, তথা দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বেসিল রাজাপক্ষ সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তিনি নিজের পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন। দেশের আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে সবথেকে প্রভাবশালী পরিবারের দ্বিতীয় সদস্যের ইস্তফা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়েছে। বেসিল এদিন বলেন, “আজ থেকে আমি কোনও সরকারি কাজে যুক্ত থাকব না। তবে আমি রাজনীতি থেকে দূরে থাকব না, থাকতে পারব না।”
বৃহস্পতিবার কলোম্বোতে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, “আমার বদলে অন্য কাউকে এই জায়গায় পাঠানোর জন্যই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর মাহিন্দা রাজাপক্ষকে এখনও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। তবে তিনি এখনও অবধি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেননি। তিন রাজাপক্ষ ভাইরা বছরের পর বছর ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তবে বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছিলেন, রাজপক্ষ পরিবারের সদস্যরাই দেশের এই চরম আর্থিক সঙ্কটের জন্য দায়ী।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর থেকে ৭০ বছরে এই প্রথম এই চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি ২ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ। অর্থনীতিবিদদের মতে বিদেশী মুদ্রার ঘাটতি কারণেই দেশে জ্বালানি, ওষুধ ও রান্নার গ্যাসের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে রনিল বিক্রমাসিংঘে আর্থিক সঙ্কট থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছেন। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ডের সঙ্গে লঙ্কা সরকারের আলোচনাও চলছে। এই বিষয়ে ভারত, চিনের মতো বন্ধু দেশগুলির সাহায্যও চেয়েছে সেদেশের সরকার। এখন আর্থিক সঙ্কটের পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।