কাবুল: মার্কিন সেনার শেষ বিমান আকাশে উড়তেই শূন্যে গুলি চালিয়ে বিজয় উৎসব পালন করেছিল তালিবানরা। বিদেশী শক্তির হাত থেকে আফগানিস্তানকে উদ্ধারের পাশাপাশি তাদের আনন্দের আরও একটি কারণ ছিল মার্কিন বাহিনীর বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার। তবে বাইডেনের সেনাও অত বোকা নয়, যা কিছু সামরিক অস্ত্র বা বিমান নিয়ে যেতে পারেনি তারা, তা যাওয়ার আগেই সম্পূর্ম বিকল করে দেওয়া হয়েছে। আর এতেই বেজায় চটেছে তালিবান।
তালিবানদের অভিযোগ, হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইচ্ছে করেই ক্ষয়ক্ষতি করেছে মার্কিন সেনা। তার ক্ষতিপূরণ এখন দিতে হচ্ছে তালিবানকে। আল জাজিরার সূত্র মতে, মার্কিন সেনা চলে যাওয়ার পর তালিবানদের মনে হয়েছে তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক হেলিকপ্টার, বিমান ফেলে গেলেও সেগুলি সমস্ত কিছুই বিকল করে দেওয়া হয়েছে।
তালিবানের দাবি, তারা মার্কিন বাহিনীকে অনুরোধ করেছিল যে অন্তত হেলিকপ্টারগুলি যেন অক্ষত অবস্থায় রাখা হয়, তাহলে সেগুলি তারা ব্যবহার করতে পারবে। দীর্ঘ সময় ধরে আফগানিস্তানেই ওই অস্ত্রভাণ্ডার ও বিমানগুলি থাকায় তা জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। সেই হিসাবে নতুন তালিবান সরকারের অধিকার রয়েছে ওই সামরিক ভাণ্ডার ব্যবহার করার।
মঙ্গলবার, ৩১ অগস্টই ছিল উদ্ধারকার্য ও সেনা প্রত্যাহারের শেষ দিন। শেষ মুহূর্তে বিমানবন্দরে একের পর এক হামলা হওয়ায় তড়িঘড়ি দেশ ছাড়তে হয়েছে মার্কিন সেনাকে। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি সামরিক বিমান, হেলিকপ্টার ও বিপুল সংখ্যক অস্ত্র। তবে তালিবানের হাতে সেই অস্ত্র গেলে পরিণতি ভয়ানক হতে পারে, এই আশঙ্কা করেই বিকল করে দেওয়া হয় সমস্ত যন্ত্রপাতি।
বর্তমানে কাবুল বিমানবন্দরে সামরিক পোশাক ছাড়াও হ্য়াঙ্গারে সিএইচ-৪৬ হেলিকপ্টার, ২৭টি হামভিস ও ৭৩টি বিমান পড়ে রয়েছে। এদিকে তালিবানদের দাবি, বর্তমানে তাদের কাছে মোট ৪৮টি বিমান রয়েছে। যদিও এরমধ্যে কটি বিমান সচল, সে সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি।
তালিবান মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, কাতার থেকে টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের আনা হয়েছে বিমানবন্দর সারাই ও পরিস্কারের জন্য। সেই কারণে সাধারণ মানুষ যেন আপাতত কয়েকদিন বিমানবন্দর চত্বর এড়িয়েই চলেন। যদিও সূত্রের খবর, বিমানবন্দর সাফাই নয়, মার্কিন বাহিনীর ফেলে যাওয়া বিমান ও হেলিকপ্টারগুলি সচল করা সম্ভব কিনা, তা জানতেই বিশেষজ্ঞদের আনা হয়েছে। একইসঙ্গে তালিবানরা বিমান বা কপ্টার চালাতেও পারে না। বাহিনীকে প্রশিক্ষম দেওয়ানোও হবে এই সময়ে।
অন্যদিকে, আরেক তালিবানি সদস্য আনাস হাক্কানি সরাসরি আমেরিকার উপরই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বিমানবন্দর পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “বছরের পর বছর ধরে বলা হয়েছে যে আমরা ধ্বংসাত্বক। কিন্তু এখন দেখাই যাচ্ছে কারা আসলে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। আমাদের জাতীয় সম্পত্তি নষ্ট করে দিয়েছে ওরা।” আরও পড়ুন: শুক্রবারের নমাজের পরই ‘শুভকাজ’! আন্তর্জাতিক সাহায্যের আশায় বসে নয়া তালিবান সরকারও