কাবুল: নারী স্বাধীনতা বলে আর কিছুই থাকছে না আফগানিস্তানে। মহিলাদের উপরে একের পর এক ফতোয়া জারি করছে তালিব সরকার। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তালিবান সরকার যে নতুন নিয়ম জারি করা শুরু করেছে, তাতে মহিলাদের উপরে নিষেধাজ্ঞাই সবথেকে বেশি। সম্প্রতিই মহিলাদের একা রাস্তায় বেরনো, রেস্তরাঁয় পুরুষদের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়া থেকে শুরু করে স্কুলে যাওয়া, সমস্ত বিষয়ের উপরই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবার নতুন ফতোয়ায় জানানো হল, সংবাদমাধ্যমে যে সমস্ত মহিলারা সঞ্চালিকার কাজ করেন, তাদের মুখ ঢেকেই সংবাদপাঠ করতে হবে।
জানা গিয়েছে, তালিবান সরকারের পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফেও একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে টোলো নিউজের তরফে জানানো হয়েছে, তালিব সরকার সাফ জানিয়েছে যে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং কোনওভাবেই বদল করা হবে না।
ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের সমস্ত সংবাদমাধ্যমে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। টোলো নিউজের সংবাদ পাঠিকা ইয়ালদা আলিকে মাস্ক পরে খবর পাঠ করতে দেখা যায়। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এই কাজ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। অন্যদিকে, সংসদ টিভি নামক একটি সংবাদমাধ্যমে প্রথমে সংবাদপাঠিকাদের মাস্ক পরে খবর পরতে দেখলেও, পরে আবার দেখা যায় যে তারা মাস্ক ছাড়াই খবর পরছেন।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালের মধ্যে যখন তালিবানের হাতে প্রথমবারের জন্য আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা ছিল, সেই সময় আফগানি সমস্ত মহিলাদের সর্বক্ষণ বোরখা পরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাদের চোখও দেখা যেত না। শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল মহিলাদের। শরিয়া আইন অনুযায়ী পুরুষসঙ্গী ছাড়া মহিলাদের বাইরে কোথাও যাওয়ার অনুমতিও ছিল না। গত বছর অগস্ট মাসে ফের যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালিবান, সেই সময় জানানো হয়েছিল যে, আধুনিক সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই শরিয়া আইন মানা হবে। মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করেই তাদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টোটাই ঘটছে।