
কাবুল: তালিবান (Taliban) ফিরছে পুরনো তালিবানি রীতিতেই। লঘু অপরাধে গুরুতর শাস্তি, এই নিয়মে ফিরছে তালিব সরকার। মঙ্গলবার জনসমক্ষেই চরম শাস্তি দেওয়া হল নয়জনকে, প্রকাশ্যে কেটে নেওয়া হল তাদের হাত। শাস্তি প্রাপকদের অপরাধ, তাদের মধ্যে কেউ সমকামী, কেউ আবার চুরি করেছেন। মঙ্গলবার এমনই অপরাধে আফগানিস্তানের (Afghanistan) কান্দাহারের (Kandahar) একটি স্টেডিয়ামে নয়জন আফগান বাসিন্দাকে শাস্তি দিল সে দেশের তালিবান সরকার। শাস্তি দেওয়ার সেই দৃশ্য চোখের সামনে দেখলেন শয়ে শয়ে মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আফগানিস্তানের কান্দাহারের আহমেদ শাহি স্টেডিয়ামে তালিবান সরকার নয়জনকে প্রকাশ্যে নয়জনকে শাস্তি দেওয়া হয়। জনসমক্ষে চাবুক পেটা করার পর তাদের হাত কেটে নেওয়া হয়। আফগানিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্য়ম টোলো নিউজের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, “আফগানিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে চুরি ও সমকামিতার অপরাধে নয়জনকে কান্দাহারের আহমেদ শাহি স্টেডিয়ামে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই নয়জনের হাত কেটে নেওয়ার সময় স্থানীয় প্রশাসন ও কান্দাহারের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই অভিযুক্তদের ৩৫ থেকে ৩৯ বার চাবুক দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর তাদের হাত কেটে নেওয়া হয়। এদিকে, পূর্ববর্তী আফগানিস্তান সরকারের মন্ত্রীর প্রাক্তন পরামর্শদাতা শবনম নাসিমি জানান, কান্দাহারের ফুটবল স্টেডিয়ামে চারজনের হাত কেটে নেওয়া হয়েছে।
তিনি টুইট করে লেখেন, “চুরির অভিযোগে কান্দাহারের ফুটবল স্টেডিয়ামে চার ব্যক্তির হাত কেটে নেওয়া হয়েছে। বিনা বিচার প্রক্রিয়াতেই আফগানিস্তানের মানুষদের প্রকাশ্যে মারধর, এমনকী হাত কেটে নেওয়া হচ্ছে। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।”
আন্তর্জাতিক মহলে তালিবানের এই নীতির চরম সমালোচনা করা হলেও, সে দেশের শাসকের তরফে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম নেতার জারি করা ডিক্রি অনুসারেই প্রকাশ্যে মারধর ও ফাঁসির মতো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতিই রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে একটি বিবৃতি পেশ করে বলা হয়েছিল, “২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে আফগানিস্তানের সরকার তাখার, লোগার, লাংমান, পারওয়ান ও কাবুল মিলিয়ে ১০০-র বেশি পুরুষ ও মহিলাকে প্রকাশ্যে চাবুকাঘাত করা হয়েছে। চুরি, অবৈধ সম্পর্ক বা সামাজিক নিয়ম অমান্য করার অপরাধে ২০ থেকে ১০০ বার চাবুকের আঘাত করা হয়েছে। স্টেডিয়ামে এই ধরনের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষ দেখতে পান।”