টেক্সাস: চেহারা সাদামাটা হলেও জীবন অতটা সহজ সরল ছিল না সালভাডর রামোসের। টেক্সাসের একটি প্রাথমিক স্কুলে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে ১৮ শিশু সহ মোট ২১ জনকে হত্যার পর থেকেই খবরের শিরোনামে এই ১৮ বছরের কিশোর। সদ্য যৌবনে পা রাখা মৃত আততায়ীর সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে পুলিশি তদন্তে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতিই তাঁর ১৮ বছরের জন্মদিন ছিল। জন্মদিনে উপহার হিসাবেই দুটি সেমি-অটোমেটিক রাইফেল কিনেছিল সে।
মঙ্গলবার টেক্সাসের রব এলিমেন্টারি স্কুলে ঢুকে হামলা চালায় সালভাডর রামোস। একের পর এক ক্লাসরুমে ঢুকে খুদে পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। যে ১৮ জন পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে, তাদের সকলেরই বয়স ৫ থেকে ১১ বছরের মধ্যে ছিল বলে জানা গিয়েছে। মৃত্যু হয় ৩ জন শিক্ষক ও স্কুলকর্মীরও। রামোসকে থামাতেই বাধ্য হয়ে গুলি চালায় পুলিশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, যথেষ্ট সমস্যার মধ্যে দিয়েই কেটেছিল রামোসের ছোটবেলা। শৈশবে কথা বলতে কিছু সমস্যা থাকায় সহপাঠীরা ক্রমাগত তাঁকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। সহপাঠীদের করা নিগ্রহ এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে একাধিকবার স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। এদিকে বাড়িতেও শান্তি পেত না রামোস। মা মাদকাসক্ত হওয়ায়, প্রায়সময়ই বাড়িতে অশান্তি লেগে থাকত।
যে প্রাথমিক স্কুলে হামলা চালিয়েছিল রামোস, সেই স্কুলেই পঠনরত দুই পড়ুয়ার অভিভাবকেরা রামোসকে চিনতেন। তাঁরা অভিযুক্ত ওই কিশোরকে ‘বদরাগী’র তকমাই দিয়েছেন। ছোট থেকেই মায়ের মুখে মুখে তর্ক করার অভ্য়াস ছিল রামোসের, এমনটাই দাবি তাঁদের।
হামলার আগে ইন্সটাগ্রামে সঙ্কেতবাহী বার্তা দিয়েছিল রামোস। তাঁর আপলোড করা পুরনো একটি রিলে দেখা গিয়েছে, সে তাঁর মায়ের উপরে চিৎকার করছে এবং তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করছে। ঘটনাস্থলে কয়েকজন পুলিশকেও উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছিল সেই সময়। ছোট থেকে তাঁর বাড়িতে যে অশান্তি ছিল, তা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়তে থাকে বলেই দাবি করেছেন রামোসের প্রতিবেশীরা। তবে অভিযুক্ত কিশোর একাচোরা হওয়ায়, কেউই তাঁকে ভালভাবে চিনত না বা তাঁর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানত না।