Pakistan Train Hijack: ‘চোখের সামনে গুলি করে মারছিল যারাই…’, ট্রেনের ভিতরে মহিলা আর পুরুষ যাত্রীদের সঙ্গে কী করছিল জঙ্গিরা, শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে

Pakistan-Baloch Terrorist Clash: জাফর এক্সপ্রেসের যাত্রী মহম্মদ বিলাল সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানান, তিনি তাঁর মাকে নিয়ে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, "কীভাবে পালিয়ে এলাম, তা বলার শব্দ পাচ্ছি না। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এখনও আতঙ্কে রয়েছি।"

Pakistan Train Hijack: চোখের সামনে গুলি করে মারছিল যারাই..., ট্রেনের ভিতরে মহিলা আর পুরুষ যাত্রীদের সঙ্গে কী করছিল জঙ্গিরা, শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে
ট্রেন থেকে পালিয়ে আসা যাত্রীরা।Image Credit source: PTI

|

Mar 12, 2025 | 12:23 PM

ইসলামাবাদ: ভাই বসেছিল পাশের সিটে, কারোর আবার স্ত্রী। হঠাৎ কানে এসেছিল গুলির শব্দ। তারপরই শুরু তোলপাড়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুধু অনিশ্চয়তায় কেটেছিল। আদৌ বাঁচবেন কিনা, সেই ভরসাই ছিল না। যখন সুযোগ পেলেন, প্রাণ হাতে কোনওমতে পড়িমরি দৌড় লাগালেন। পিছনে পড়ে থাকা পরিজনদের কথা মাথায় থাকলেও, তাদের খুঁজে বের করার সুযোগটা ছিল না।

এটাই পাকিস্তানের আজকের ছবি। গৃহযুদ্ধ লেগেছে ভারতের পড়শি দেশে। গোটা একটা ট্রেনই ছিনতাই করে নিয়েছিল বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি। রাতভর লড়াই চালিয়ে ট্রেন থেকে ১৫০-রও বেশি বন্দিকে মুক্ত করেছে পাক নিরাপত্তা বাহিনী। খতম করা হয়েছে ২৫ জন বালোচ জঙ্গিকে। এখনও ট্রেন থেকে অনেক যাত্রী উদ্ধার বাকি। যারা প্রাণ বাঁচিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, তাদের অভিজ্ঞতাও ভয়ঙ্কর।

মঙ্গলবার দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের বালোচিস্তানের পাহাড় ঘেরা নির্জন এলাকায় রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটায় বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি। মাঝ রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেন। সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনে থাকা ৪৫০ জন যাত্রীকে বন্দি বানায় জঙ্গিরা। পাক সরকার খবর পেতেই নিরাপত্তা বাহিনী পাঠায়। শুরু হয় লড়াই, যা এখনও জারি রয়েছে। উদ্ধার করা গিয়েছে ১৫০ জন যাত্রীকে।

যারা কোনওমতে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন, তারা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। জাফর এক্সপ্রেসের যাত্রী মহম্মদ বিলাল সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানান, তিনি তাঁর মাকে নিয়ে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, “কীভাবে পালিয়ে এলাম, তা বলার শব্দ পাচ্ছি না। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এখনও আতঙ্কে রয়েছি।”

আরেক যাত্রী আল্লাদিত্তা বলেন, “হঠাৎ কানে একটা বিস্ফোরণের শব্দ এসেছিল। তারপর লাগাতার গুলি। ওই জঙ্গিরা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে চালাতেই ট্রেনে উঠেছিল। আতঙ্কে সবাই সিটের নীচে লুকোতে শুরু করে। জঙ্গিরা এস পুরুষ ও নারীদের আলাদা করে দেয়। তবে আমি হার্ট পেশেন্ট বলায় ওরা আমায় ও আমার পরিবারকে যেতে দিল।”

যাত্রীরা যারা মুক্তি পেয়েছিলেন, জঙ্গিরা তাদের প্রাণে না মারলেও, লোকালয়ে পৌঁছতে কালঘাম ছুটে যায়। আল্লাদিত্তা বলেন, “পাহাড়ি রাস্তার মধ্যে দিয়ে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটেই চলছিলাম কাছের স্টেশনে পৌঁছনোর জন্য। রমজান চলায় আমি কিছু খাইনি। এখন নিরাপদ আশ্রয়ে আসার পরও আমি মুখে কিছু তুলতে পারছি না, এতটাই আতঙ্ক গ্রাস করেছে।”

আরেক যাত্রী জানান, বালোচ জঙ্গিরা সকলের আইডি কার্ড যাচাই করছিল। যারাই অন্য প্রদেশের বাসিন্দা, তাদের গুলি করছিল। এক যাত্রী সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, “ওরা এসে আইডি কার্ড দেখছিল। আমার চোখের সামনে দু’জন সেনাকে গুলি করে মারল। বাকি চারজনকে কোথায় নিয়ে গেল জানিনা। আমি কোনওভাবে ট্রেন থেকে নেমে ৪ ঘণ্টা হেঁটে স্টেশনে পৌঁছেছি। যারা পঞ্জাবী, তাদের ওরা (জঙ্গিরা) অন্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছিল।”