Bangla News World This Women was forced to change her title due to her infamous brother
‘কুখ্যাত’ দাদার কারণে পদবী বদলাতে বাধ্য হন বোন
TV9 Bangla Digital | Edited By: Shubhendu Debnath
Oct 07, 2021 | 6:33 PM
ঘটনা হল ভদ্রমহিলা জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়ে ফেলার পর পিতৃদত্ত পদবী বদলাতে বাধ্য হন। এছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। না হলে তাঁকে সমাজে এক ঘরে হয়ে যেতে হত
1 / 5
কতজন চেনেন পাওলা উলফকে! কেউ কেউ হয়ত চিনলেও চিনতে পারবেন, তবে অধিকাংশের কাছেই তাঁর পরিচিতি অগোচরে। 'পাওলা উলফ' ভদ্রমহিলার সম্পূর্ণ নাম নয়। এই নামের পেছনে আরও একটি নাম লুকিয়ে রয়েছে। ঘটনা হল ভদ্রমহিলা জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়ে ফেলার পর পিতৃদত্ত পদবী বদলাতে বাধ্য হন। এছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। না হলে তাঁকে সমাজে এক ঘরে হয়ে যেতে হত।
2 / 5
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে কে এই পাওলা উলফ? তাঁর আসল পদবিই বা কী। পাওলা উলফের আসল পদবি পাওলা হিটলার! জার্মানির কুখ্যাত শাসক অ্যাডলফ হিটলারের একমাত্র আপন বোন এই পাওলা হিটলার। কিন্তু পাওলাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অস্ট্রেলিয়া থেকে জার্মানিতে চলে আসার পর এক প্রকার বাধ্য হয়েই তিনি নিজের পদবী বদলে ফেলতে হয়, যাতে কেউ তাঁকে হিটলারের বোন হিসেবে চিনতে না পারে।
3 / 5
সদ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে। শুধু যে ইহুদিরা হিটলারের ওপর ক্ষুব্ধ তা নয়, বরং সেই সময় খাঁটি জার্মানরাও হিটলারকে ঘৃণার চোখে দেখছেন। সকলেরই মনোভাব হিটলার না থাকলে এত বড়ো ধ্বংসযজ্ঞ পৃথিবীতে ঘটত না। সেই সময় জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ায় অনেক হিটলার পদবীধারী মানুষকে শুধু পদবীর কারণেই সমাজে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছিল। হিটলার পদবিটি দেখলেই তখন লোকজন ক্ষেপে গিয়ে তাদের আক্রমণ করে বসছিলেন। জনমানসে ধারণা তৈরি হয়েছিল অ্যাডল্ফ হিটলারের বংশধর মানেই তারা হিটলারের সমপরিমাণ অপরাধী।
4 / 5
তবে পাওলা হিটলারের ভাগ্যটা ছেলেবেলা থেকেই ছিল খারাপ। মাত্র ৬ বছর বয়সে পিতৃহারা হন তিনি। মা ক্লারা হিটলার তাকে এবং তাঁর দাদা অ্যাডলফকে নিয়ে অস্ট্রিয়ার লিঞ্জ শহরে বসবাস করতে শুরু করেন। কিন্তু মাত্র ৫ বছর পর, পাওলার ১১ বছর বয়সে ক্লারা হিটলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর অ্যাডলফ হিটলার বোনের খুব একটা দায়িত্ব নেননি। চিত্রশিল্পী ও রাজনৈতিক নেতা হওয়ার বাসনা নিয়ে তিনি অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা চলে যান। এমনকি বাবার পেনশনের বেশিরভাগটাই নিজে নিয়ে, বোনকে যৎসামান্য অর্থ পাঠাতেন প্রতিমাসে। সেইসময় অশেষ কষ্টে জীবন কাটত পাওলার। পরবর্তীকালে জার্মান রাজনীতিতে হিটলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে শুরু করলেও ভাগ্য ফেরেনি পাওলার। জার্মান রাজনীতিতে যখন হিটলারের উত্থান ঘটছে তখন তার বোন ভিয়েনায় কখনও গৃহ পরিচারিকার কাজ করে, আবার কখনও বা কোনও বেসরকারি সংস্থায় সহকারীর কাজ করে দিন গুজরান করছেন। এর মধ্যেই ১৯৩০ সালে দাদার কারণেই একটি বীমা কোম্পানি থেকে পাওলাকে ছাঁটাই করা হয়। কারণ ততদিনে গোটা বিশ্বের কাছে অ্যাডল্ফ হিটলার এক বদ্ধ উন্মাদ, জাতিবিদ্বেষী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
5 / 5
অবশ্য এই ঘটনার পর অ্যাডল্ফ হিটলার কিছুটা মুখ তুলে তাকান বোনের দিকে। সেই সময় থেকেই তিনি প্রতিমাসে বোনকে একটি সম্মানজনক অর্থ পাঠাতে থাকেন। যদিও পাওলা ভিয়েনাতে থেকে যান। তিনি আর বার্লিন, মিউনিখের মত শহরে আসেননি। বছরে একবার বা দু'বার মাত্র দাদার সঙ্গে তার দেখা হত। চিঠিতেও যোগাযোগ খুবই কম ছিল। কারণ বরাবরই দাদার সঙ্গে পাওলার দূরত্ব থেকে গিয়েছিল। যদিও পাওলা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বাস করেননি যে তার দাদা এত অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তিনি বারবার দাবি করেছেন অ্যাডলফ হিটলারের মত একজন মানুষ কখনই নরসংহার করতে পারেন না। ১৯৬০ সালে ৬৪ বছর বয়সে জার্মানিতে মৃত্যু হয় পাওলা উলফের। ততদিনে তার 'হিটলার' পদবী ইতিহাসে পরিণত হয়েছে।