
সংঘর্ষ-বিরতির পিছনে আসল হাত কার? চলতে থাকা নাটকে এবার নতুন প্লেয়ার। ভারত-পাক সংঘর্ষ-বিরতি, দাবি এবং পাল্টা দাবি, ভারত অস্বীকার করার পরেও ট্রাম্পের গোঁ ধরে থাকা – এসব প্রসঙ্গ তো এখন অতীত। কিন্তু মূল প্রশ্নটার উত্তর এখনও অধরা। সংঘর্ষ-বিরতির পিছনে কারা ছিল? সংঘর্ষ বিরতির আগে-পরে কী হয়েছিল? কেউ তো একজন ছিলেন যাঁর হাত ধরে সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে কথা শুরু হয়!
জিও টিভিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইশাক দার দাবি করলেন, সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে যে যা পারছে বলছে। বেশিরভাগই ভুলভাল। তারপর জিও নিউজের সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি আপনাকে সত্যি বলছি। ৬ আর ৭ তারিখ রাতে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক ছিল না। ভারত প্রথমে হামলা চালিয়েছিল। শাহবাজ শরিফ পাক সেনা পাল্টা জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আমরা হামলা চালানোর আগেই ভারত ঘনঘন হামলা শুরু করে। ভারত আমাদের বায়ুসেনা ঘাঁটি, নুর খান ও শরকোটকে টার্গেট করেছিল। দুই বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ভারতের হামলার শুরুর ৪৫ মিনিটের মধ্যে, আমার কাছে ফয়সল বিন সলমনের ফোন আসে। সৌদি আরবের যুবরাজ এবং মহম্মদ বিন সলমনের ভাই ফয়সল বিন সলমন। ইশাক দার দাবি করলেন, তখন মার্কিন বিদেশসচিব মার্কো রুবিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। ফয়সল নিজে থেকেই ভারতের সঙ্গে, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি জানিয়ে দিই, আপনি কথা বললে, এগিয়ে এলে ভালই হয়। আমাদের আপত্তির প্রশ্নই নেই। সৌদি যুবরাজ ভারতের সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলার পরই সমঝোতার রাস্তা খোলে।
ইন্টারভিউতে একেবারে শেষ ভাগে গিয়ে ইশাকের স্বীকারোক্তি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সংঘর্ষ হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই থামতে হবে। তাই ভারতের সঙ্গে কথা বলতে মনস্থ করি। আমরা মনস্থ কথাটার অর্থ কী? অর্থ এটাই যে অর্থাত্ পাকিস্তানের তরফেই ভারতের কাছে আবেদন করা হয়। কূটনীতির জগতে এর চেয়ে এর থেকে স্পষ্ট মেসেজ আর কিছু হতে পারে না। ইশাক দারের স্বীকারোক্তি থেকে কী প্রমাণিত হয়? এক, সংঘর্ষ বিরতির প্রস্তাব পাকিস্তানের কাছ থেকেই এসেছিল। দুই, এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প কোথাও ছিলেন না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রথম থেকেই মিথ্যে বলছেন এবং বলেই চলেছেন। কেন? সেটা সম্ভবত ট্রাম্পই জানেন। ট্রাম্প এর পরেও একইভাবে সমঝোতা করানোর দাবি করেছে। করুন, তার মুখ আর বন্ধ করা যাবে না। ভারত যা বোঝানোর বুঝিয়ে দিয়েছে। এবার পাকিস্তানও সত্যিটা মেনে নিল। এরপর ট্রাম্প কী দাবি করলেন, তাতে কিছু যায় আসে না।