ওয়াশিংটন: বসের ঘর থেকে নিয়মিত টাকা সরাতেন। ধরাও পড়ে গিয়েছিলেন। তাও বস ভালবেসে আরও একটা সুযোগ দিয়েছিল। তারপরও চুরি থামেনি। কিন্তু এবার চোর বাবাজির মনে ভয় ধরল, সে যে চুরি করে, তা বসের কাছ থেকে জেনে ফেলবে তার প্রেমিকা। আর প্রেমিকা তার চুরির কথা জানতে পারলে, তাকে ছেড়ে চলে যাবে। তাই, বসের মাথা কেটে নিল সে। হ্যাঁ, এমনই এক অদ্ভূত অপরাধ ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শুক্রবার (২৪ মে), সেখানকার এক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সিইও-র ব্যক্তিগত সহকারী স্বীকার করেছে, সে তার বান্ধবীর কাছ থেকে তার চুরি লুকানোর জন্য তার বসের শিরশ্ছেদ করেছে।
বসের অ্যাকাউন্ট থেকে সে সব মিলিয়ে ৪ লক্ষ মার্কিন ডলার চুরি করেছিল। তার চুরি প্রথম ধরা পড়েছিল ২০২০-র জানুয়ারিতে। নাইজেরিয়া ভিত্তিক মোটরবাইক স্টার্টআপ সংস্থা, গোকাদা-র সিইও ছিলেন ফাহিম সালেহ। তাঁর চোখে হঠাতই ধরা পড়েছিল, তাঁর একটি কর্পোরেট খরচের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯০ হাজার ডলার গায়েব।
সালেহ বুঝতে পেরেছিলেন টাকাটা সরিয়েছে তাঁর তরুণ ব্যক্তিগত সহকারি, টাইরিস হ্যাসপিল। তবু, তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেননি। কারণ, তিনি নিজেকে হ্যাসপিলের অভিভাবক বলে মনে করতেন। তিনি হ্যাসপিলকে একটি অর্থপ্রদান পরিকল্পনার মাধ্যমে ওই টাকাটা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাকে যথেষ্ট সময় দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও, হ্যাসপিল তার পেপ্যাল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সংস্থা থেকে চুরি করতে থাকে।
আদালতে, তাঁর আইনজীবী বলেছেন, একই সঙ্গে কীভাবে তার অপরাধ সম্পর্কে সালেহ-র মুখ বন্ধ রাখা যায়, তার উপায় খুঁজছিল। যাতে কথাটা কোনোভাবে তার ফরাসি গার্লফ্রেন্ড, মেরিন চাভেউজের কানে না যায়। তার চুরির বিষয়ে জানলে, তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যাবে বলে ভয় পেয়েছিল সে। হ্যাসপিল ভেবেছিল দুটি বিকল্প রয়েছে – আত্মহত্যা অথবা হত্যা। শেষ পর্যন্ত সে শেষ পথটাই বেছে নিয়েছিল।
পরিকল্পনা মতো, ফাহিম সালেহের অ্যাপার্টমেন্টে ঢুকেছিল সে। প্রথমে সালেহকে বিদ্যুতের শক দিয়ে অজ্ঞান করেছিল হ্যাসপিল, তারপর তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছিল। তারপর, তার মাথা কেটে দেহ থেকে আলাদা করে দিয়েছিল। এরপর, বসের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেই সে হত্যাকাণ্ড পরিষ্কার করার জিনিসপত্র কিনেছিল। জায়গাটি ভাল করে পরিষ্কার করেছিল। কিন্তু, তারপরও সেখানে পাওয়া ফরেন্সিক সূত্র ধরেই পুলিশ হ্যাসপিলকে হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।