
ক্যালিফোর্নিয়া: কথায় বলে প্রেম অন্ধ। ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ, বয়স – কিছুই মানে না প্রেম। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-কে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে এই রকমই এক অনন্য প্রেমের গল্প। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অনেক ঘটনাই শোনা যায়। এটিও এক বিবাহ বহির্ভূত প্রেমের কাহিনি। তবে, তার মধ্যেই আছে এক অনন্য মোচড়। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়েছিল এক মহিলার। এর কিছুদিন পর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। এরপর ওই মহিলা তাঁর এক বিবাহিত বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে সেই বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। সেই থেকে দুই মহিলার মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। ঘটনার এখানেই শেষ নয়, এখন ওই তিনজনই, অর্থাৎ ওই মহিলা ও তাঁর বন্ধু দম্পতি এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা সকলকে চমকে দিয়েছে।
এই কাহিনির তিন চরিত্রের নাম – পিদ্দু কওর, স্পিতি এবং সানি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই তিন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় বসবাস করেন। ২০০৯ সালে পিদ্দুর দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁর ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর, তিনি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ভারতে এসেছিলেন। সেই সময় তাঁর বন্ধু সানি ও তাঁর স্ত্রী স্পিতিও ভারতেই ছিল। তাঁদের বাড়িতেই উঠেছিলেন পিদ্দু। এক সপ্তাহ সেই বাড়িতে ছিলেন। ওই সময়ের মধ্যেই স্পিতির সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। আমেরিকায় ফিরে আসার পরও স্পিতির সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন পিদ্দু। এরপর, তাঁরা দুজনে এই সম্পর্কের কথা গোপন না করে, সানিকে সব খুলে বলেন। এখন এই তিনজনই একটি ত্রয়ী সম্পর্কে লিভ ইন বা সহাবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উল্লেখ্য, এই তিনজনের চার সন্তানও রয়েছে।
এই সম্পর্কের বিষয়ে এক ভিডিয়োতে স্পিতি বলেছেন, “আমরা একে অপরকে খুব ভালবাসি। সানি আর আমার একেবারে ছোটবেলা থেকে সম্পর্ক রয়েছে। তখন আমরা পঞ্জাবে থাকতাম। এরপর বাবা-মায়ের সঙ্গে নিউইয়র্কে চলে গিয়েছিল সানি। তখন ওর বয়স আট। তবে আমাদের সম্পর্ক ভাঙেনি। বেশ কয়েক বছর ধরে প্রেম করার পর, ২০০৩ সালে আমরা বিয়ে করি।পিদ্দুর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাকে খুব সতর্ক থাকতে হয়েছিল। সানি কীভাবে নেবে, সেই ভাবনার সঙ্গে ছিল অপবাদের ভয়। কিন্তু আমাদের এই সম্পর্ক আজও ভালোভাবেই চলছে।”
তিন পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে এই ত্রয়ী সম্পর্কের বিষয়ে অনেক বাধা ছিল। আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই কটূক্তি করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁদের সঙ্গে অনেক আত্মীয় যোগাযোগও বন্ধ করে দিয়েছে। তবে, সবার প্রথমে এই সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলেন সানির মা। তিনি বলেছেন, “প্রথমে আমি এই সম্পর্ক নিয়ে ভয় পেয়েছিলাম। তবে ওরা খুব ভালোভাবে সবকিছু সামলেছে।” অন্যদিকে স্পিতির মা জানিয়েছেন, এমন সম্পর্কের কথা তিনি আগে কখনও শোনেননি। কিন্তু সন্তানরা খুশি থাকলে, আর কিছুতেই কিছু যায় আসে না।