City of Monkeys: ৩০,০০০ বানরের জন্য তৈরি হচ্ছে আস্ত এক শহর! গভীর উদ্বেগে মানুষ

City of Monkeys: শুনলে মনে হতে পারে বোধহয় 'প্ল্যানেট অব দ্য এপস' সিরিজের কোনও সিনেমার কাহিনি। কিন্তু, না, সিনেমা নয়। ঘোর বাস্তব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া প্রদেশের ছোট্ট শহর বেইনব্রিজ। আর এই শহরেই ৩০,০০০টিরও বেশি ম্যাকাক প্রজাতির বানরদের জন্য, সেই দেশের বৃহত্তম বানর-প্রজনন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে 'সেফার হিউম্যান মেডিসিন' নামে এক সংস্থা। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পশু অধিকার গোষ্ঠীগুলি এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করছে।

City of Monkeys: ৩০,০০০ বানরের জন্য তৈরি হচ্ছে আস্ত এক শহর! গভীর উদ্বেগে মানুষ
থাইল্যান্ডে দেখা যায় প্রচুর ম্যাকাক প্রজাতির বানর Image Credit source: Twitter

Feb 20, 2024 | 10:18 AM

ওয়াশিংটন: ৩০,০০০ বানরের জন্য তৈরি হবে আস্ত এক শহর! ২০০ একর জায়গায় থাকবে বেশ কিছু সাজানো গোছানো গুদামঘর। যেখানে এই বানররা অবাধে বিচরণ করবে। খেলনা নিয়ে খেলবে। নিজেদের মতো থাকবে। এর জন্য খরচ হবে ৩৯ কোটি ৬০ লক্ষ মার্কিন ডলার! শুনলে মনে হতে পারে বোধহয় ‘প্ল্যানেট অব দ্য এপস’ সিরিজের কোনও সিনেমার কাহিনি। কিন্তু, না, সিনেমা নয়। ঘোর বাস্তব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া প্রদেশের ছোট্ট শহর বেইনব্রিজ। আর এই শহরেই ৩০,০০০টিরও বেশি ম্যাকাক প্রজাতির বানরদের জন্য, সেই দেশের বৃহত্তম বানর-প্রজনন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে ‘সেফার হিউম্যান মেডিসিন’ নামে এক সংস্থা। প্রস্তাব অত্যন্ত ভাল। এই পৃথিবী তো আর শুধু মানুষের নয়, অন্যান্য পশুদেরও সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পশু অধিকার গোষ্ঠীগুলি এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করছে। কেন জানেন?

আসলে জর্জিয়ার বেইনব্রিজ শহরের বাসিন্দার সংখ্যা মেরেকেটে ১৪,০০০। ঠিক তার পাশেই ৩০,০০০ বানর এসে উপস্থিত হলে, গোটা শহরের দখলই বানরদের হাতে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার মধ্য়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই বিশেষ প্রজাতির বানরদের স্বভাব বেশ আক্রমণাত্মক। বানরদের থেকে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে বিভিন্ন রোগ-বিরোগও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, কে চায় ঘরের পাশে ৩০,০০০ বানর এসে উপস্থিত হোক?

তাছাড়া, যতই বানরদের শহর বলা হোক, এটি আদত ওই বানরদের প্রজনন কেন্দ্র। সেখান থেকে মেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলিতে এই বানরদের পাঠানো হবে চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার জন্য। অর্থাৎ, এই বানরদের উপর চলবে কাঁটাছেঁড়া। পশু অধিকার রক্ষা গোষ্ঠীগুলিও তাই এই পরিকল্পনা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, মেডিকেল পরীক্ষার জন্য প্রাইমেটদের প্রজনন করা নিষ্ঠুরতা। বানর এবং মানুষ দুটি আলাদা প্রজাতি। তাই, তাদের উপর করা পরীক্ষা থেকে নতুন চিকিত্সার ক্ষেত্রে খুব একটা সুবিধা পাওয়া যায় না। বরং, এই পদক্ষেপের ফলে, বনে থাকার অভ্যায় হারিয়ে ফেলছে এই বানররা। এখানে, বিজ্ঞানের থেকে ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।

বস্তুত, চিকিৎসার স্বার্থে প্রাণীদের উপর যে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, তার বেশিরভাগটাই হয় ইঁদুরদের উপর। শুধুমাত্র ১ শতাংশ ক্ষেত্রে কাজে লাগে বানর। এই নিয়ে অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক রয়েছে। তবে, সংক্রামক রোগ, বার্ধক্য এবং স্নায়বিক রোগের চিকিত্সার জন্য, এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে কমপক্ষে ৭০,০০০ বানর ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি সেই বানরের সংখ্যায় টান পড়েছে। আর সেই কারণেই এই নতুন প্রজনন কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

‘সেফার হিউম্যান মেডিসিন’ সংস্থা অবশ্য বলেছে, বানরগুলিকে অত্যন্ত সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা হবে। তারা যাতে স্থানীয় এলাকায় রোগ ছড়াতে না পারে, তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এই কেন্দ্রে ২৬০টিরও বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে, যেখনে কাজের সুযোগ পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। সংস্থার আরও দাবি, প্রাণী গবেষণাকে ঘিরে অনেক ভুল তথ্য ছড়ায়। বেইনব্রিজের বাসিন্দাদের তাই, তারা তাদের উদ্দেশ্য এবং নতুন কেন্দ্রটির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সব সঠিক তথ্য দিতে চায়। তাদের মতে, বেইনব্রিজই এই প্রকল্পের জন্য সঠিক জায়গা। তবে বিতর্ক চলছেই।