United States: ১৬ বছর ধরে জঙ্গলেই বাস, সঙ্গী ৩১টি কুকুরের দল, এ এক অবিশ্বাস্য মানুষের গল্প

TV9 Bangla Digital | Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

Jan 06, 2023 | 9:27 AM

USA mountain man: সভ্যতা ত্যাগ করেছিলেন তিনি। আর সেখানে তাঁর সঙ্গী ছিল ৩১টি কুকুর। তাদের সঙ্গেই এক অসাধারণ পারিবারিক বন্ধন তৈরি করেছিলেন তিনি।

United States: ১৬ বছর ধরে জঙ্গলেই বাস, সঙ্গী ৩১টি কুকুরের দল, এ এক অবিশ্বাস্য মানুষের গল্প
৩১টি কুকুরের সঙ্গে এক অসাধারণ পারিবারিক বন্ধন

Follow Us

ওয়াশিংটন: বন্য জীবনের জন্য সভ্যতা ত্যাগ করেছিলেন তিনি। আর সেখানে তাঁর সঙ্গী ছিল ৩১টি কুকুর। তাদের সঙ্গেই এক অসাধারণ পারিবারিক বন্ধন তৈরি করেছিলেন তিনি। এলোমেলো ধূসর চুল। পরণে একটি ছিঁড়ে যাওয়া হুডি, কার্গো ট্রাউজার এবং বুট। মাথার উপর ছিল না কোনও ছাদ,এভাবেই ১৬ বছর ধরে ছিলেন জঙ্গলে। কুকুরগুলি জঙ্গলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত। কিন্তু, ওই ব্যক্তি একবার জান্তব গলায় ডাক দিলেই, জঙ্গলের বিভিন্ন দিক থেকে তারা ছুটে আসত তার কাছে। এ এ অসামান্য ব্যক্তির অবিশ্বাস্য কাহিনী।

ঘটনাটি মার্কিন যুকতরাষ্ট্রের টেনেসি প্রদেশের। সেখানকার নাচেজ ট্রেস জাতীয় উদ্যানেই ১৬ বছর সমাজ থেকে দূরে কাটিয়েছেন টনি। ২০১৬ সালে তাঁকে খুঁজে পেয়েছিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ৫। সম্প্রতি টনির কাহিনী প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে অ্যানিমাল রেসকিউ কর্পোরেশনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ওই কুকুরগুলিই ছিল তাঁর একমাত্র পরিবার। পরিবার বলতে তাদেরকেই টনি জানতেন এবং তাদের জন্য ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। শীতের মাসগুলিতে তিক্ত ঠান্ডায় একটু উষ্ণতার জন্য কুকুরগুলিকে নিয়ে জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকতেন তিনি। অ্যানিমাল রেসকিউ কর্পোরেশনের ওই কর্তা বলেছেন, “কুকুরগুলির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কতটা উষ্ণ ছিল, তা কল্পনাও করা যায় না।” আর তাঁর ডাকে জঙ্গলের গভীর থেকে ৩১টি কুকুরের ছুটে আসা, তাঁর মতে ‘দুর্দান্ত দৃশ্য’ ছিল।

তিনি ডাকলেই জঙ্গলের বিভিন্ন দিক থেকে ছুটে আসত তাঁর কুকুররা

স্থানীয় মানুষ টনির নাম দিয়েছিল ‘মাউন্টেন ম্যান’ বা পাহাড়ি মানুষ। সমাজ ত্যাগ করে শারমেয় পরিবার নিয়ে দিব্যি ছিলেন তিনি। তবে রুক্ষ জীবনযাপনে ক্রমে তাঁর স্বাস্থ্য বিপন্ন হয়ে পড়ছিল। টনি সভ্য সমাজের সাহায্য গ্রহণ করতে রাজি হয়েছিলেন, তবে দিয়েছিলেন এক শর্ত। মাউন্টেন ম্যানের দাবি ছিল, অ্যানিমেল রেসকিউ কর্পোরেশনকে তাঁর ৩১টি চারপেয়ে বন্ধুদের প্রত্যেককে গ্রহণ করতে হবে। তাদের দত্তক নেওয়ার জন্য তালিভুক্ত করতে হবে। তাদের প্রেমময় পরিবার খুঁজে দিতে হবে। যাতে তারা সুখে নিজেদের মতো করে জীবন কাটাতে পারে। টনির সেই শর্ত মেনে নেওয়া হয়েছে। কুকুরগুলিকে প্রথমে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। আরও ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচাতে একটি কুকুরের পাও কেটে ফেলতে হয়েছিল পশুচিকিত্সকদের। তারপর তারা একে একে বাড়ি পেয়েছে, পরিবার পেয়েছে।

অ্যানিম্যাল রেসকিউ কর্পোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রে টনির এক কুকুর

চ্যনেল ৫-এর সাংবাদিকরা এবং অ্যানিম্যাল রেসকিউ কর্পোরেশনের কর্মীরা জানিয়েছেন, কুকুরগুলিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার সময় যুদ্ধ জয়ের আনন্দ ছিল টনির চোখমুখে, একই সঙ্গে ছিল বিচ্ছেদের বেদনাও। কেন তিনি সভ্য সমাজ ত্যাগ করেছেন, তা কখনও জানাননি টনি। তিনি এখন কোথায় আছেন তাও জানা যায় না। তবে, পশুদের প্রতি টনির ভালোবাসার দারুণ অনুপ্রেরণার বলে জানিয়েছেন চ্যানেল ৫-এর প্রতিবেদনের দর্শকরা। তাঁরা বলেছেন, টনি জীবনে যে ভালোবাসা পেয়েছেন, অধিকাংশ মানুষ তার পরিচয়ই পায় না। তাঁর কাছে বিশ্বাস এবং সাহচর্যই সবকিছু।

Next Article