জাকার্তা: কুমিরের শরীরে যে আবার দয়ামায়া আছে, তা কে জানত? এমনকি, ছদ্ম সমবেদনা প্রকাশকে বাংলায় বলাই হয় কুমিরের কান্না। এহেন এক কুমিরই সম্প্রতি ডুবে যাওয়া নিখোঁজ এক শিশুর দেহ এনে দিল তাঁর বাবা-মায়ের কাছে। অবাক হয়ে গিয়েছিলেন মুয়ারা জাওয়া নামে ইন্দোনেশিয়ার এক ছোট শহরের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, পূর্ব কালিমন্থন জেলার মাহাকম নদীতে ডুবে গিয়েছিল শিশুটি। তারপর থেকে আর তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না তাঁর বাবা-মা। শিশুটির খোঁজে যখন মখম নদী তোলপাড় করছে উদ্ধারকারীরা, সেই সময়ই একটি বিশালাকার কুমিরকে দেখা যায় উদ্ধারকারীদের দিকে এগিয়ে আসতে। তাঁর পিঠে দেখা যায় একটি শিশুর দেহ। দেখা যায়, দেহটি আগে ডুবে যাওয়া শিশুটিরই দেহ।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে। জানা গিয়েছে, মুয়ারা যাওয়া শহরের তার বাড়ির পিছনেই খেলা করছিল ৪ বছরের মহম্মদ জ়িয়াদ উইজায়া। একাই ছিল সে। আচমকা বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মহাকম নদীর স্রোতে ভেসে গিয়েছিল সে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি তার আত্মীয়রা। এই অবস্থায় তারা খবর দিয়েছিলেন প্রশাসনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ দলকে পাঠানো হয়, শিশুটির দেহ উদ্ধারের জন্য। তারা যখন নদীর জলে তল্লাশি চালাচ্ছেন, সেই সময়ই উদ্ধারকারীদের দিকে এগিয়ে এসেছিল কুমিরটি। ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
A crocodile caught on camera carrying the body of a toddler above his head in the Mahakam River, Kutai Kartanegara, East Kalimantan, Indonesia ??
Muhammad Ziyad Wijaya, 4 years old, was reportedly drowned & has been missing for 2 dayshttps://t.co/NsonbJEsHN pic.twitter.com/nBCuY8kXXQ
— Saad Abedine (@SaadAbedine) January 21, 2023
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, শিশুটির দেহ পিঠে নিয়ে উদ্ধারকারীদের নৌকোর দিকে এগিয়ে আসছে কুমিরটি। কাছাকাছি আসার পর, শিশুটির দেহ নৌকোয় তুলে নেন উদ্ধারকারীরা। শিশুটি উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জলের নীচে উধাও হয়ে যায় কুমিরটি। দেহটি এরপর দ্রুত নদীর পাড়ে পাঠানো হয়। শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। আগেই জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল তার। তবে, আশ্চর্যের বিষয় হল, কুমিরটি তার কোনও ক্ষতি করেনি। তার দেহ একেবারে অক্ষত অবস্থাতেই পাওয়া যায়। শুধুমাত্র, তার দেহটি পিঠে তোলার জন্য কুমিরটি একবার কামড়ে ধরেছিল। সেই একটি জায়গাতেই দাঁতের দাগ পড়েছিল।
শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে না বাঁচানো গেলেও, কুমিরটি যেভাবে তার দেহ উদ্ধার করে মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গিয়েছে, তা ওই এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। কোনও কুমিরকে এমন আচরণ করতে এর আগে কেউ দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। এমনকি, প্রাণী বিশেষজ্ঞরাও কুমিরটির আচরণের কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।