কানাডা: বিদেশে বাড়ি-ঘর কিংবা বড় বড় গাছপালা এক জায়গা থেকে তুলে নিয়ে অন্যত্র সরানো ছবি তো আগেও অনেক দেখেছেন। কিন্তু এমনভাবে বাড়ি সরানোর দৃশ্য হয়ত আগে কখনও দেখেননি আপনি। পেল্লায় এক অট্টালিকার সমান আস্ত একখানা বাড়িকে তুলে অন্যত্র বসানো হল। কীভাবে জানেন? প্রায় ৭০০টি সাবান ব্যবহার করা হয়েছে এই বাড়িটি অন্যত্র সরানোর জন্য। ঘটনাটি ঘটেছে কানাডার হ্যালিফ্যাক্স শহরে। প্রায় ২০০ বছরের পুরনো ওই বাড়িটির ওজন ২২০ মেট্রিক টন। বিশাল এই অট্টালিকাটি তৈরি হয়েছিল ১৮২৬ সালে। তখন অবশ্য এটি একটি বাড়ি হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। পরে ১৮৯৬ সালে এটিকে একটি হোটেলে পরিণত করা হয়। পেল্লায় এই ভবনটি বদলে যায় ভিক্টোরিয়া এলেমউড হোটেলে।
এরপর ২০১৮ সালে প্রায় ভাঙা যাচ্ছিল শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই হোটেলটি। স্থানীয় এক রিয়েল এস্টেট সংস্থা গ্যালাক্সি প্রোপার্টিজ় এই হোটেলটি কিনে নেয়। ফলে সে যাত্রায় ভাঙার হাত থেকে রক্ষা পায় হ্যালিফ্যাক্সের এই দুশো বছরের পুরনো হোটেল। নতুন মালিক পক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, ওই হোটেল ভবনটিকে রাস্তার আরও কাছে এগিয়ে নিয়ে আসার। কারণ, ওই জায়গায় একটি একটি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো স্থানীয় এক নির্মাণ সংস্থা এস রুশ্টনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিল্ডিংটি রাস্তার দিকে এগিয়ে আনার। দু’টি বুলডোজ়ার, একটি টোয়িং ট্রাক ও স্টিলের ফ্রেম ব্যবহার করে এই বিশাল হোটেল ভবনটিকে সামনের দিকে এগিয়ে আনে নির্মাণ সংস্থা। সঙ্গে তারা ব্যবহার করেছিল প্রায় ৭০০টি সাবান। আর তা দিয়েই প্রায় ৩০ ফুট সামনের দিকে এগিয়ে আনা হয় বিল্ডিংটিকে।
নির্মাণ সংস্থার তরফে ওই হোটেল তুলে সরানোর টাইমল্যাপস ভিডিয়োও শেয়ার করা হয়েছে ফেসবুকে। প্রায় কয়েক সপ্তাহ ধরে নিখুঁত পরিকল্পনার পর শেষ পর্যন্ত দুশো বছরের প্রাচীন ওই বিল্ডিংটিকে প্রথমবারের জন্য তুলে অন্যত্র বসানো হল।
এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর কলকাতা প্রেমীরাও মনে করছেন, এইভাবে ইতিহাস বিজরিত বাড়িকে ধ্বংসের মুখে ছেড়ে না দিয়ে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত বহু ইমারত রয়েছে, যা কলকাতার ইতিহাসকে বহন করে বেড়ায়। আজ সেগুলো প্রায় ভগ্নদশায়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুরনো বাড়ি ভেঙে তৈরি হচ্ছে ঝাঁ চকচকে ফ্ল্যাট। উৎকৃষ্ট উদাহরণ উত্তর কলকাতাই। কানাডার যদি একটি শহর ২০০ বছরের ইমারতকে বাঁচাতে এমন আপ্রাণ চেষ্টা করে, কলকাতা কেন পারবে না?