মোদীর শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে কী বলল প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের দফতর?
PM Narendra Modi: রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের আমন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা সফরে যান মোদী। ২০১৫ সালের পর এটি ছিল তাঁর চতুর্থ সফর। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নয়াদিল্লিতে তাঁর প্রথম সরকারি সফর করেছিলেন।

রবিবার (৬ এপ্রিল, ২০২৫) কলম্বোতে রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমার দিশানায়েকের কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শ্রীলঙ্কা সফর ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ এবং ‘মহাসাগর’ দৃষ্টিভঙ্গিতে দ্বীপরাষ্ট্রের ভূমিকাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। প্রধানমন্ত্রীর সফর চলাকালীন সময়ে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং ডিজিটালাইজেশনের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের আমন্ত্রণে শ্রীলঙ্কা সফরে যান মোদী। ২০১৫ সালের পর এটি ছিল তাঁর চতুর্থ সফর। গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নয়াদিল্লিতে তাঁর প্রথম সরকারি সফর করেছিলেন।
রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর ‘শতাব্দীর বন্ধুত্ব, সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি’ দ্বারা পরিপূর্ণ। এটি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে।
এই সফর দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও উন্নত করেছে এবং তাঁদের বহুমুখী অংশীদারিত্বকেও শক্তিশালী করেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত ‘মহাসাগর’রের দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও গুরত্বপূর্ণব।”
মোদীর এই সফর, পারস্পরিক বৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথকে উৎসাহিত করবে বলেই আশা। রবিবার দেশে ফেরার আগে মোদী ঐতিহাসিক শহর অনুরাধাপুরায় জয় শ্রী মহা বোধি মন্দির পরিদর্শন করেন এবং শ্রদ্ধেয় বৌদ্ধ মন্দিরে শ্রদ্ধা জানান।
বিশ্বাস, সম্রাট অশোকের কন্যা সংঘমিত্ত মহা থেরি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে ভারত থেকে শ্রীলঙ্কায় একটি চারা গাছ নিয়ে আসেন। সেই গাছ আজ মন্দিরের পবিত্র বোধিগাছ রূপে পরিচিত।
অনুরাধাপুরার আটটি মহান বৌদ্ধ মন্দিরের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত মোস্ত ভেন পাল্লেগামা হেমরথন নায়েকে থেরার সঙ্গেও সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনার জন্য সাক্ষাৎ করেন মোদী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান ১৯৬০-এর দশকে গুজরাটে বুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছিল। মোদী জানান, শ্রীলঙ্কায় এই পবিত্র ধ্বংসাবশেষ প্রদর্শনের সম্ভাবনা নিয়ে রাষ্ট্রপতি দিশানায়েকের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
বুদ্ধগয়াকে একটি আধ্যাত্মিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়ে কথা হয় ওই আলোচনাড়। প্রধানমন্ত্রী মোদী দিশানায়েককে এই পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস জানিয়েছেন।
প্রধান ভিক্ষু বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি পেশ করেন, যাতে বৌদ্ধদের বৌদ্ধ প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী মোদী আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।”
দিশানায়েকে এবং মোদী যৌথভাবে উত্তর মধ্য প্রদেশের মাহো থেকে উত্তর প্রদেশের ওমানথাই পর্যন্ত উন্নত উত্তর রেলপথের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি অনুরাধাপুরা রেলওয়ে স্টেশনে একটি উন্নত রেল সিগন্যালিং ব্যবস্থারও উদ্বোধন করেন।
মাহো-ওমানথাই রেলপথ প্রকল্পটি ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের তহবিলে সম্পন্ন হয়েছিল, যার মোট বিনিয়োগ ছিল ৯১.২৭ মিলিয়ন ডলার। মাহো-অনুরাধাপুরা রেলপথ সিগন্যালিং ব্যবস্থাটি ভারত সরকার কর্তৃক অর্থায়ন করা হয়েছিল ১৪.৮৯ মিলিয়ন ডলার।
