
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত বছরের জুলাইয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন বাংলাদেশের ছাত্র যুবরা। আর সেই আন্দোলনের জেরে পতন হয় হাসিনা সরকারের। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়। বন্ধ হয়ে যায় আন্দোলন। জুলাই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাওয়া কি ঠিক ছিল? আন্দোলন বন্ধ হওয়ার পিছনে কী উদ্দেশ্য ছিল? কয়েকমাস আগে সাংবাদিক বৈঠকে এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদি। তাঁর মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই সাংবাদিক বৈঠক। কী বলেছিলেন তিনি?
জুলাই আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রদের একাংশ ও জাতীয় নাগরিক কমিটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) গঠন করে। জুলাই আন্দোলন বন্ধের জন্য এনসিপি-কেই দায়ী করেছিলেন ওসমান হাদি। সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে বন্ধ করে দিল এনসিপি। যদি এই আন্দোলন আরও ৬ মাস টিকিয়ে রাখতে পারত, তাহলে আমরা আওয়ামি লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারতাম। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র দিতে পারতাম। কারণ, এখানে সবাই ছিল। কিন্তু, ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে গিয়ে কতজন শাহবাগের পক্ষে গেল, কতজন বিপক্ষে গেল। জামাত, ইসলামপন্থীদের পক্ষে গেল, আবার দুঃখপ্রকাশ করল। তাই, চারমাস আগে তাদের যে জনপ্রিয়তা ছিল, এখন রাস্তায় এসে দাঁড়ালে ১০০ জন আসে না।”
এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “এই যে তোমাদের সঙ্গে ১০০ জন নেই, এটা আমাদের জন্য আনন্দদায়ক নয়। এটা দুঃখ। জুলাই হেরে যাচ্ছে। সুতরাং এনসিপি-কে দায় নিতে হবে।”
জুলাইয়ের সেই আন্দোলনকে থামতে দেওয়া যাবে না বলেও বার্তা দিয়েছিলেন হাদি। বলেছিলেন, “জুলাইকে হেরে যেতে দেওয়া যাবে না। জুলাই যদি এবার হেরে যায়, বাংলাদেশের মানুষকে আগামী ১০০ বছর এর দায় বয়ে বেড়াতে হবে। অগণিত মানুষ গুম হবে, খুন হবে। নিউজ করার মতো কেউ থাকবে না। কোনও সাংবাদিক বন্ধু মারা গেলে নিউজ করার মতো কেউ থাকবে না বাংলাদেশে। প্রশ্ন হল, বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে কি না। জুলাই বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ থাকবে। জুলাই না থাকলে বাংলাদেশ থাকবে না। এনসিপি-কে নিয়ে আর কথা বলে লাভ নেই। তবে এই জুলাই আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়াতে গিয়ে যদি আমাদের বিএনপি, জামাতের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়, আমরা সমস্ত জুলাই জনতাকে নিয়ে আবার মাঠে নামব।”