বিশ্ব: প্রমাণিত সত্য না-হলেও এখনও পর্যন্ত ওমিক্রন (Omicron)-এ আক্রান্তদের পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, ডেল্টার চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক হলেও, ওমিক্রন হয়তো ততটা ভয়ঙ্কর নয়। তা হলে উদ্বেগটা কীসের? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)–এর প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসুস মনে করিয়ে দিলেন ডেল্টার ভ্যারিয়েন্টের মতো বিপজ্জনক না হলেও ওমিক্রনকে মৃদু ভাবারও কোনও কারণ নেই। বিশেষত তাঁদের জন্য যাঁদের এখনও ভ্যাকসিনেশন হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের জানান যাঁদের টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন কম ক্ষতিকারক হিসাবে দেখা দিলেও একে মোটেই মৃদু বা মাইল্ড হিসাবে চিহ্নিত করা যায় না। তিনি যোগ করেন, ‘অন্য ভ্যারিয়েন্টদের মতো ওমিক্রনও মানুষকে হাসপাতালে যেতে বাধ্য করছে, এমনকী মানুষ মারছেও। আসলে এত তাড়াতাড়ি এবং বিশাল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন যে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপর চাপ বাড়ছে’।
ইউরোপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আপৎকালীন আধিকারিক ক্যাথরিন স্মলউডের গলাতেও একই সুর। তিনি বলছেন, ‘বিশ্ব জুড়ে ক্রমেই থাবা চওড়া করছে ওমিক্রণ। সংক্রমণের এই প্রবল বৃদ্ধির কারণে আরও বহু বার মিউটেট করে জন্ম নিতেই পারে করোনার আরও কোনও ভ্যারিয়েন্ট’।
অর্থাৎ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, আগামিদিনে আরও বিপজ্জনক কোনও ভ্যারিয়েন্ট আসতেই পারে। ওমিক্রন যত বেশি ছড়ায়, তত বেশি প্রতিলিপির সম্ভাবনা বাড়ে। মিউটেশন হবেই। ফলে নতুন ও শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট আসার সম্ভাবনা বেশি। এখন ওমিক্রনের দ্রুত সংক্রামক ক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত সবাই। যেহেতু এটি ডেল্টার চেয়েও বেশি সংক্রামক। ফলে পরবর্তী ভ্যারিয়েন্টেও যে এই ট্রেন্ড বজায় থাকবে না, তাই নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই।
সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সাংবাদিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইনসিডেন্ট ম্যানেজার আবদি মাহমুদ বৈঠকে বলেন, ‘ভাইরাসের এই রূপটির প্রথম খোঁজ মিলেছিল গত নভেম্বরে। এই ভ্যারিয়েন্টটি তেমন বিপজ্জনক হলে ফ্রান্স এত দিনে টের পেত। সেটা কিন্তু হয়নি। তবু আমরা নজর রাখছি।’ আবদি জানান, ওমিক্রন নিয়ে এখনও বিস্তর গবেষণা বাকি। তবে প্রাথমিক গবেষণালব্ধ ফলের উপর ভিত্তি করে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমরা গবেষণা করে দেখেছি, ওসিক্রন ফুসফুসের পরিবর্তে শ্বাসনালীর উপরের অংশকে প্রভাবিত করে। এটাকে ভালো খবর বলা যেতেই পারে। তবে যাঁরা টিকা নেননি, বয়স্ক বা যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের সাবধান থাকতেই হবে। ভাইরাসের রূপ কিন্তু ক্ষণে ক্ষণে বদলাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: Covid Hospitalization: হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতা কম, উপসর্গহীনরা এড়াতে পারেন কোভিড পরীক্ষা