নিউ ইয়র্ক : একদিকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে ঘিরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। তারই মধ্যে আমেরিকা-ব্রিটেনের মতো একাধিক দেশে প্রতিনিয়ত হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই অবস্থায় এক মার্কিন মহিলার সঙ্গে ঘটে গেল এক অদ্ভুত ঘটনা। আরটি-পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়েই বিমান যাত্রা করছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝ আকাশে আচমকাই করোনা আক্রান্ত হলেন ওই মহিলা! ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করতেই ধরা পড়ল সংক্রমণ। কীভাবে নিজেকে আলাদা করবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। বাকি পথটা তাই তাঁকে বাথরুমের ভিতরেই থাকতে হয়।
শিকাগো থেকে আইসল্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর হঠাৎ গলায় অস্বস্তি অনুভব করেন তিনি। বিমানে ওঠার আগে একাধিকবার করোনা পরীক্ষায় তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ থাকায় কার্যত নিশ্চিন্তেই ছিলেন ওই মহিলা। তবুও গলায় অস্বস্তি হতে নিজেই পরীক্ষা করার কথা ভাবেন। তাঁর মনে হয় পরীক্ষা করিয়ে স্বস্তি পাবেন তিনি। বাথরুমে গিয়ে ব়্যাপিড টেস্ট করান ওই মহিলা, আর সেখানে দেখেন রিপোর্ট পজিটিভ। সঙ্গে সঙ্গে একরাশ দুশ্চিন্তা তাঁর মাথায় চেপে বসে। বিমানে ওঠার আগেই পরিবারের সঙ্গে নৈশভোজ সেরেছেন তিনি। তাই পরিবারের কী হবে? বিমানের যাত্রীদের থেকেই বা নিজেকে আলাদা করবেন কীভাবে? এসব ভেবে কেঁদে ফেলেন ওই মহিলা। ছুটে যান বিমানের এক কর্মীর কাছে।
এরপর বিমানের ওই কর্মী তাঁকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেন। কোথায় তাঁকে একা বসানো সম্ভব, সেই জায়গা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু বিমানের যাত্রী সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে আলাদা কোনও সিট জোগাড় করা মুশকিল হয়। তখন ওই মহিলা নিজেই বাথরুমে নিজেকে আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তখনও বাকি তিন ঘণ্টার পথ। আর সেই সময়টা বাথরুমেই কাটান তিনি। বাথরুমের দরজায় লিখে দেওয়া হয় ‘আউট অফ সার্ভিস’। এভাবে আইসল্যান্ড পৌঁছন ওই মহিলা।
ওই মহিলা জানিয়েছেন যেহেতু কর্মসূত্রে তিনি টিকা পাননি এমন মানুষজনের সঙ্গে কাজ করেন তাই তিনি সর্বদা সতর্ক থাকেন। বিমানে ওঠার আগে তাঁর দুবার ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ও দুবার আরটি-পিসিআর টেস্ট হয়েছে। প্রত্যেকবারই তাঁর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। ওই মহিলার করোনা টিকার দুটি ডোজ়ই নেওয়া আছে, এমনকি বুস্টার ডোজ়ও নিয়েছেন তিনি। এরপরও বিমানযাত্রার মাঝেই এ ভাবে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অবাক তিনি।
আইসল্যান্ডে পৌঁছনোর পর ফের তাঁর ব়্যাপিড টেস্ট ও আরটি-পিসিআর টেস্ট হয়। দুটি ক্ষেত্রেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বিমানে তাঁর সঙ্গে থাকা তাঁর বাবা ও ভাইয়ের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায়, তাঁরা সুইজারল্যান্ডের বিমান ধরার অনুমতি পান। কিন্তু ওই মহিলাকে আইসল্যান্ডের হোটেলেই আইসোলেশনে থাকতে হয়। ১০ দিন পর তিনি করোনা মুক্ত হন।
আরও পড়ুন : Omicron Situation in India: জ্বর-গলা ব্যাথা দেখলেই করোনা পরীক্ষা, রাজ্যগুলিকে পরামর্শ কেন্দ্রের