Taliban: চুল টেনে ছিঁড়ে নেওয়া, দাঁত উপড়ে ফেলা ‘দানব’দের কাছেই ওদের ফিরতে হচ্ছে আবার
Taliban: যে মহিলা আইনজীবী একসময় একাধিক মহিলার বিচ্ছেদে সাহায্য করেছেন, তাঁর কাজ বন্ধ হয়েছে তালিব আমলে। তাই শিকল ভাঙার কোনও আশাও দেখতে পাচ্ছেন না মহিলারা।
আফগানিস্তান : তালিবান যেদিন আবার কাবুল কব্জা করল, সেদিনই ওরা বুঝে গিয়েছিল ভয়ঙ্কর দিন ফিরছে। তবে সেটা যে এভাবে সত্যি হয়ে যাবে, তা বোধহয় ভাবেনি ওরা। শুধু পুরুষের কথা ভাবতেই পছন্দ করে তালিবান, এ কথা অনেকেরই জানা। নারীর স্বাধীনতা তো দূর, ন্যুনতম অধিকারটুকুও যেন দিবা-স্বপ্ন তালিব-রাজ্যে। তাই মার্কিন সমর্থিত সরকারের আমলে যে অধিকারটুকু পেয়েছিলেন আফগান মহিলারা। সেটা সুদে-আসলে ফিরিয়ে নিচ্ছেন তালিবান। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে যাঁরা বিচ্ছেদের পথ বেছে নিয়েছিলেন, তাঁদের সেই প্রাক্তন স্বামীদের কাছেই ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে। সম্প্রতি AFP-র রিপোর্টে এমনই বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ছবি উঠে এসেছে।
আট সন্তানের মা মারোয়া (নাম পরিবর্তিত)। শারীরিক, মানসিক অত্যাচারে একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার আগে আইনের পথ ধরে বেরিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু তালিবান ক্ষমতায় ফিরতেই ‘সুখের দিন’ শেষ। ফিরে যাওয়ার পর আবারও সেই একই অত্যাচার। এক গোপন আস্তানায় বসে মারোয়া জানান, মাথার চুল এত জোরে টানতেন স্বামী যে কার্যত টাক পড়ে গিয়েছিল তাঁর। ঘরের মধ্যে বেঁধে রাখা হত, ভেঙে দেওয়া হয় আঙুলও। এমনকী একেক দিন অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকলে, সন্তানেরাই খাইয়ে দিতেন মা-কে। কোনও রকমে পালিয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর সন্তানেরা বলছেন, না খেতে পাই তাও ভাল! তাই বলে বাবার কাছে আর নয়।
১৫ বছরে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সানার (নাম পরিবর্তিত)। ১০ বছরের পর এক ব্যক্তির সঙ্গে। সন্তানও হয়। কিন্তু সে এক বিভীষিকা! সন্তান কাঁদলেই স্বামীর মার, রান্না ভাল না হলে আবার মার। নারী আবার কথা বলবে? কখনই মেনে নিতে পারতেন না তাঁর স্বামী। মার্কিন সমর্থিত সরকার থাকাকালীন কোনও ক্রমে মুক্তি মিলেছিল তাঁর। আর একদিন হঠাৎই দরজায় কড়া নাড়ে তালিবান। ঘর থেকে টেনে বের করে আনে সানাকে। তাঁর মেয়ের সঙ্গে তালিব সদস্যের বিয়ে ঠিক করে ফেলেন তাঁর স্বামী। ব্য়স, আর ঝুঁকি নেননি সানা। পালিয়ে গিয়েছেন। কোনও ক্রমে মাথা গোঁজাই ঠাঁই জুটেছে। এখনও ভয় একটাই, আবার কোনওদিন ওরা কড়া নাড়বে না তো?
বহু মহিলার মধ্যে এ তো গেল কয়েকটা উদাহরণ মাত্র। যে মহিলা আইনজীবী একসময় একাধিক মহিলার বিচ্ছেদে সাহায্য করেছেন, তাঁর কাজ বন্ধ হয়েছে তালিব আমলে। তাই শিকল ভাঙার কোনও আশাও দেখতে পাচ্ছেন না মহিলারা।