নয়া দিল্লি : ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হবে ১ ফেব্রুয়ারি। তার আগে আগামীকাল, ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে অর্থনৈতিক সমীক্ষা। অর্থনৈতিক সমীক্ষা হল দেশের অর্থনীতির বার্ষিক রিপোর্ট কার্ড। দেশের প্রতিটি সেক্টরের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করে ভবিষ্যতের পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয় এই রিপোর্টে। পাশাপাশি দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমানও থাকে এই রিপোর্টে। তাই বাজেট পেশের আগে এই রিপোর্টের দিকে সবারই নজর থাকে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য প্রকাশিত অর্থনৈতিক সমীক্ষায় কেন্দ্রের তরফে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ ধার্য করা হতে পারে। যদিও এই সংখ্যা কেবল অনুমান মাত্র। তবে এই সংখ্যাই আগামীদিনের অর্থনীতির গতিবিধির বিষয়ে সরকারের চিন্তাভাবনার ছবি তুলে ধরে জনসাধারণের সামনে।
উল্লেখ্য, বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ৮.৭ শতাংশ হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ভারতের। জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের (এনএসও) অগ্রিম অনুমান অনুসারে, ভারতীয় অর্থনীতি চলতি অর্থবছরে ৯.২ শতাংশ বৃদ্ধির রেকর্ড গড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান, ৯.৫ শতাংশের চেয়ে কিছুটা কম হতে পারে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার। এর আগে গত বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত অর্থনৈতিক সমীক্ষার অনুমান অনুযায়ী, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ভারতে ১১ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে। এই পরিস্থিতিতে ২০২২ অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতি নিয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ২০২১ অর্থবর্ষে দেশের অর্থনৈতিক রিপোর্ট কার্ডের অপেক্ষায় বিভিন্ন মহলের মানুষ। কেন্দ্রীয় বাজেটের একদিন আগে সোমবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ২০২১-২২ অর্থবর্ষের অর্থনৈতিক সমীক্ষা পেশ করবেন সংসদে। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন আগামীকাল বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২১-২২ নিয়ে আলোচনা করতে একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। প্রসঙ্গত, ভি অনন্ত নাগেশ্বরনকে গত শুক্রবারই দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করে কেন্দ্র। উল্লেখ্য, এই অর্থনৈতিক সমীক্ষার রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার। তবে ভি অনন্ত নাগেশ্বরন দায়িত্ব নেওয়ার আগে ডিসেম্বরেই তৈরি হয়েছে আগামীকাল প্রকাশ হতে চলা রিপোর্টটি। প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রামানিয়ামের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রকের আধিকারিকরা ২০২১-২২ অর্থবর্ষের সমীক্ষার রিপোর্ট তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছিলেন।
অর্থনৈতিক সমীক্ষায় সাধারণত দুটি অংশ থাকে। প্রথম ভলিউমে নীতি পরামর্শ রয়েছে৷ দ্বিতীয় ভলিউমে সেক্টর ভিত্তিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ রয়েছে। প্রতিটি অর্থনৈতিক সমীক্ষার একটি থিম আছে। গত বছরে অর্থনৈতিক সমীক্ষার থিম ছিল জীবন ও জীবিকা বাঁচানো। ২০১৭-১৮ সালে, অর্থনৈতিক সমীক্ষা গোলাপী ছিল, কারণ সেবারের থিম ছিল নারীর ক্ষমতায়ন। প্রথম অর্থনৈতিক সমীক্ষা ১৯৫০-৫১ সালে উপস্থাপন করা হয়েছিল। ১৯৬৪ সাল থেকে কেন্দ্রীয় বাজেটের একদিন আগে এই সমীক্ষা প্রকাশের রীতি শুরু হয়। সমস্ত অর্থনৈতিক সমীক্ষা https://www.indiabudget.gov.in/economicsurvey/-এ পাওয়া যায়। কেউ সাইট থেকে চাইলেই গত বছরের অর্থনৈতিক সমীক্ষা কিনতে পারেন।