Aditi Bhosale: রতন টাটার দেখা পেতে ১২ ঘণ্টার অপেক্ষাতেই ভাগ্যবদল, এখন ১৮৫ কোটি টাকার ব্যবসা করছেন দম্পতি
Aditi Bhosale: রেপোস নামে একটি জ্বালানি বণ্টন সংস্থা চালায় ওয়ালুঞ্জ দম্পতি। আর এই ব্যবসা শুরু করার আগে রতন টাটার সঙ্গে দেখা করার জন্য ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছেন তাঁরা।
শিল্পপতি রতন টাটার (Ratan Tata) সম্বন্ধে অনেকেই অনেক গল্প কথা শুনেছেন। ব্যবসায়িক জগতে তাঁর সহৃদয়তার কথা ঘোরাফেরা করে। ব্যবসার পাশাপাশি একাধিক জনকল্যাণমূলক কার্যকলাপের সঙ্গেও জড়িত থাকেন এই ধনকুবের। ব্যবসায়িক জগতে তাঁর এই খ্যাতির কারণে অনেকেই অনুসরণ করে থাকেন রতন টাটাকে। স্টার্ট আপ শুরু করা হোক বা নিজের কোনও ব্যবসা- রতন টাটাকে দেখেই উদ্বুদ্ধ হন একাধিক মানুষ। যেমনটা অদিতি ভোসালে ওয়ালুঞ্জ ও চেতন ওয়ালুঞ্জের ক্ষেত্রে ঘটেছে।
এই ওয়ালুঞ্জ দম্পতি বর্তমানে একটি জ্বালানি বণ্টন সংস্থা চালায়। সংস্থার নাম রেপোস (Repos)। তবে এখন যতটা মসৃণভাবে তাঁদের ব্যবসা চলছে, শুরুর দিকে তেমনটা মোটেও ছিল না। আর এই ব্যবসায়িক জগতে পা রাখার আগে থেকেই রতন টাটাকে পথিকৃত হিসেবে মেনে চলতেন ওয়ালুঞ্জ। আর স্বাধীন ব্যবসা স্থাপনে এই টাটাই তাঁদের আলো দেখাবেন এমনটাই আশা করেছিলেন ওয়ালুঞ্জ দম্পতি। তাঁরা ঠিকই করে নিয়েছিলেন রতন টাটার সঙ্গে দেখা করবেনই। এবং ঠিক হলও তাই। যেমন চাওয়া তেমনি পাওয়া। রতন টাটার সঙ্গে দেখাও হল তাঁদের। চেতন এবং অদিতি ভোসালে ওয়ালুঞ্জ রেপোস এনার্জি নামে একটি স্টার্টআপ চালান। তাঁদের জীবনের মূলমন্ত্র হল কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো। প্রতিষ্ঠানটি সব ধরনের জ্বালানি এক ছাতার নীচে তৈরি করতে চায়। ২০১৭ সালে টাটা সমর্থিত একটি প্রকল্প হিসাবে তাঁদের পথচলা শুরু হয়েছিল। এই আইকনিক ব্যবসায়ী রতন টাটার সঙ্গে দেখা করার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টার পরে এই প্রকল্পটি এসেছিল তাঁদের কাছে।
ভোসালে একটি লিঙ্কডইন পোস্টে জানান, টাটা আপনার কোনও প্রতিবেশী নন যে তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন দেখা করতে পারবেন। তিনি তখন টাটার চেয়ারম্যান ছিলেন। এদিকে এই দম্পতির বিজনেস স্কুল থেকে কোনও প্রথাগত শিক্ষা বা ডিগ্রি ছিল না। তাই নিজেদের ব্যবসা দাঁড় করাতে তাঁদের অনেকটাই কাঠ খড় পোড়াতে হয়েছে। ব্যবসা করার আদপ কায়দাটা রীতিমতো শিখতে হয়েছে তাঁদের। তাঁরা তাঁদের স্বপ্নটাকে একটি 3D উপাস্থাপনা হিসেবে তৈরি করেন। তারপর তা রতন টাটার কাছে তুলে ধরার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। কথায় রয়েছে কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। ভোসালেদের জন্যও বিষয়টি অনেকটা সেরকমই ছিল। টাটার সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁদের রীতিমতো লেগে থাকতে হয়েছে। প্রথমে তাঁরা টাটাকে একটি হাতে লেখা চিঠি পাঠান। এমনকী টাটার সহকারীদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন তাঁরা। সোজা মুম্বইতে টাটার বাসভবনে গিয়েও হাজির হয়েছিলেন তাঁরা। সেখানে ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। আর স্বাভাবিকভাবেই নিজের বিভিন্ন কাজ নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত ছিলেন রতন টাটা। সেদিনের মতো তাঁর সঙ্গে আর দেখা হবে না ভেবে হোটেলের রুমে ফিরে যান ভোসালে দম্পতি।
তবে ১ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁরা একটি ফোন কল পান বলে জানিয়েছেন। ফোনের ওপাশে যা বলা হয়েছিল তা হল, “নমস্কার, আমি অদিতির সঙ্গে কথা বলতে পারি? আমি রতন টাটা, আপনার চিঠি পেয়েছি….আমরা দেখা করতে পারি?” প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না অদিতি। রতন টাটার মতো একজন ব্যক্তিত্ব নিজে তাঁকে কল করেছেন! যতবারই সেটা কল্পনা করেছেন ততবারই বিস্ময় জেগেছে তাঁর মনে। তবে বেশি দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা রতন টাটার সঙ্গে দেখা করেন এবং পেশ করেন তাঁদের প্রেজেন্টেশন। আর তাঁদের প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে সম্মত হন রতন টাটা। এই সংস্থায় দু’বার বিনিয়োগ করেছেন টাটা। এখন অনেকটাই ফুলে ফেঁপে উঠেছে রেপোস। দেশের মোট ১৮৮ টি শহরে রয়েছে এর উপস্থিতি। এখন ১ হাজারেরও বেশি বিজনেস পার্টনার তাঁদের। গত বছর মে মাসেই টাটার থেকে ৬৫ কোটি টাকার তহবিল পেয়েছে এই সংস্থা। আশা করা হচ্ছে এই বছর রেপোস মোট ১৮৫ কোটি টাকার ব্যবসা করবে ।