
যাঁরা এখনও বিনিয়োগ শুরু করেননি, তাঁদের একটা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আর এটা নতুন কোনও ব্যাপার নয়। এই ভ্রান্ত ধারণা বেশ পুরনো, মোটা টাকা হাতে না এলে নাকি শুরু করা যায় না। কিন্তু বাস্তব তথ্য বলছে অন্য কথা। আপনার প্রথম বিনিয়োগ কত টাকার করছেন, সেটা কখনওই পার্থক্য তৈরি করে না। বরং আপনার বিনিয়োগের পার্থক্য তৈরি করে অন্য কিছু।
অর্থ যদি না হয়, তাহলে আপনার বিনিয়োগে পার্থক্য তৈরি করে কী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনিয়োগের সময়টাই আসল পার্থক্য গড়ে দেয়। আপনি যত আগে শুরু করবেন, আপনার অর্থ তত বেশি সময় ধরে বাড়তে থাকবে। আপনার মনে হতেই পারে এ আর কী এমন কথা।
FundsIndia-এর রিপোর্ট বলছে, বয়স ৬০-এ পৌঁছানোর সময় আপনার টাকা ঠিক কত গুণ বাড়তে পারে, তা নির্ভর করে আপনি কত বছর বয়সে আপনার এই বিনিয়োগ শুরু করছেন, তার উপর।
সঠিক সময়ে শুরু করলে চক্রবৃদ্ধি সুদের ক্ষমতা অবিশ্বাস্য হয়ে ওঠে। ধরুন কোনও বিনিয়োগে আপনি বার্ষিক রিটার্ন পাচ্ছেন ১২ শতাংশ। একটা অঙ্ক করলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
দেখা যাচ্ছে, মাত্র কয়েক বছরের দেরিতেই আপনার সম্ভাব্য সম্পত্তি প্রায় অর্ধেক হয়ে যাচ্ছে। আর এই তারতম্য তৈরি হয় সময়ের কারণে।
এই সাধারণ অঙ্কটিই দেখিয়ে দেয় সময়ের সঙ্গে চক্রবৃদ্ধি সুদের প্রভাব কত শক্তিশালী। ধরুন, আপনি ২০ বছর বয়সে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন, ৬০ বছর বয়সে গিয়ে তা ৯৩ লক্ষ টাকায় দাঁড়াতে পারে। কিন্তু সেই ১ লক্ষ টাকা ৪০ বছর বয়সে যদি আপনি বিনিয়োগ করেন, তাহলে তা গিয়ে দাঁড়াবে মাত্র ১০ লক্ষ টাকায়। পার্থক্যটা বিনিয়োগের পরিমাণে নয়, কখন আপনি শুরু করেছেন তার উপর। আর সেই কারণেই আপনার আসল পুঁজি হল সময়।
এই পার্থক্যর কারণ কী জানেন? ‘সুদের ওপর সুদ’ অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি হারে যে সুদ বসে, সেটা। একে ইংরেজিতে বলা হয় Compounding। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার রিটার্নও রিটার্ন তৈরি করা শুরু করে, এই ব্যাপারটা যত বেশি সময় পাবে, তত শক্তিশালী হবে।
আপনি যদি আপনার ২০ বা ৩০-এর কোঠায় থাকেন, আপনার সেরা আর্থিক পদক্ষেপ কী জানেন? বড় অঙ্কের বিনিয়োগের সুযোগ খোঁজা নয়। আপনার সেরা পদক্ষেপ হল, এখনই বিনিয়োগ শুরু করা। ছোট অঙ্ক দিয়ে নিয়মিত বিনিয়োগ করুন, আপনার টাকা কয়েক দশক ধরে বাড়ার সুযোগ পাবে। কারণ, সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে সব সময়ই জয়ী হয় সময়, অন্য কোনও কিছু নয়।